সম্যক খান, মেদিনীপুর: ফের যাত্রীদের সাহায্যার্থে প্রকৃত বন্ধুর ভূমিকা পালন করে প্রশংসা কুড়োল আরপিএফ (RPF)। এই রক্ষীবাহিনীর তৈরি ‘মাই সহেলি’ গ্রুপটি অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের ভুবনেশ্বর থেকে সমস্তিপুরগামী চলন্ত ট্রেনের মধ্যে সন্তান প্রসব করেন এক যুবতী। সেই খবর পেয়ে মেদিনীপুর (Midnapore) স্টেশনে থামানো হয় ট্রেনটিকে। এরপর আরপিএফের ‘মাই সহেলি’ টিমের সদস্যরা চিকিৎসককে ডেকে মা এবং সদ্যোজাতকে অতি যত্নের সঙ্গে হাসপাতালে পৌঁছে দেন। এক মুহূর্তের জন্যও তাঁদের কোনওরকম অসুবিধা হতে দেননি। আর এই ভূমিকার জেরেই ফের যাত্রীমহলে প্রশংসিত হল আরপিএফ।
ঘটনা ঠিক কী? দক্ষিণপূর্ব রেল সূত্রে খবর, ১৮৪১৯ ভুবনেশ্বর-সমস্তিপুর ট্রেনে উঠেছিলেন যুবতী রিংকি কুমারী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী সুরজ কুমার এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। গন্তব্য ছিল সমস্তিপুর। কিন্তু বালাসোর পেরতেই প্রসব যন্ত্রণা (Labour pain)শুরু হয় রিংকির। রাতের চলন্ত ট্রেনেই তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। খবর পৌঁছয় আরপিএফের কাছে। দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যমে নিকটবর্তী মেদিনীপুর স্টেশনে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ট্রেনটিকে দাঁড় করানো হয়। শুরু হয় মা ও সন্তানের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আরপিএফ সদস্যরা।
[আরও পড়ুন: ‘১৬তলা থেকে ঝুলিয়ে দিয়েছিল, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি’, প্রাক্তন সতীর্থের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক চাহাল]
আরপিএফের ‘মাই সহেলি’ টিম একজন চিকিৎসককে নিয়ে স্টেশনে পৌঁছে যান। এরপর মা ও সদ্যোজাতকে পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্টেশন থেকে হাসপাতাল পৌঁছনোর কোনও গাড়ি না থাকায় নিজেরাই একটি প্রাইভেট কার ঠিক করেন তাঁরা। তাতে মহিলার স্বামী-সহ তিনজনকে নিয়ে রওনা দেওয়া হয় হাসপাতালের উদ্দেশে। তাঁদের কাজে সাহায্য করেন মেদিনীপুরের স্টেশন মাস্টারও (SM)। তাঁদের নিরাপদে যখন হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়, তখন ঘড়িতে ১১টা ১০। মাত্র পঁয়ত্রিশ মিনিটেই সমস্ত কাজ হয়ে গেল নির্বিঘ্নে। এই মুহূর্তে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ফিমেল ওয়ার্ডে ভরতি মা, ছেলে। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্বামী ও পরিবারের সদস্যরাও। দক্ষিণপূর্ব রেলের যাত্রাপথে এমন ঘটনা প্রায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রেলকর্তারা।