সৌরভ মাজি, বর্ধমান: স্বামীর পরকীয়ার পথের কাঁটা হয়েছিলেন। তার জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন করেছে স্বামী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের হাজরাপাড়ায়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক স্বামী। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম রুমা ঘোষ (৩৫)। সোমবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার বিষয়ে মৃতের বাপের বাড়ির তরফে ঝুমার স্বামী প্রহ্লাদ ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
[ট্রেনের সামনে আটকে শিশু, খড়দহ থেকে রানাঘাট ছুটল লালগোলা প্যাসেঞ্জার]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকবছর আগে মন্তেশ্বর থানার গোয়ালবাড়ি গ্রামের ঝুমার সঙ্গে হাজরাপাড়ার প্রহ্লাদের বিয়ে হয়। প্রহ্লাদ পেশায় ছানা ব্যবসায়ী। ঝুমার জেঠু শীতল ঘোষ এদিন জানান, ছানা ব্যবসার সূত্রে জামাই নিয়মিত শক্তিগড়ে যাতায়াত করত। সেখানকারই এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে প্রহ্লাদ। বিষয়টি জানতে পারেন ঝুমা। তিনি স্বামীর এই পরকীয়ার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। প্রতিবাদ করেন। আর সেই কারণে প্রায়ই দুজনের মধ্যে অশান্তি হত। প্রহ্লাদ তার স্ত্রীকে মারধরও করত বলে অভিযোগ। রবিবার দুপুরে সেই অশান্তি চরমে ওঠে। ঝুমা ও প্রহ্লাদের মধ্যে তুমুল অশান্তি শুরু হয়। সেই সময় প্রহ্লাদ ভারী কিছু দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঝুমা।
পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় ওইদিন বিকেলের দিকে। অবস্থায় সঙ্কটজনক হওয়ায় সোমবার ভোরে ঝুমাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। তখন ফের তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। এদিন সেখানেই ময়নাতদন্ত হয়েছে মৃতদেহের। হাসপাতালে এসেছিলেন শীতলবাবু। তিনি বলেন, “প্রহ্লাদ শক্তিগড়ের এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া নিয়মিত যৌনপল্লিতেও যাতায়াত করত। ঝুমার পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। স্ত্রী হিসেবে স্বামীকে সুপথে ফিরে আসার জন্য বলত। কিন্তু প্রহ্লাদ তা শুনত না। প্রতিবাদ করলেই ঝুমাকে মারধর করত প্রহ্লাদ। রবিবার মাথায় ভারী কিছু আঘাত করে পিটিয়ে মেরে ফেলল আমাদের মেয়েকে।”
[বিয়েতে আপত্তি পরিবারের, ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আত্মঘাতী যুগল]
এদিন হাসপাতালে এসেছিলেন প্রহ্লাদের মা অর্থাৎ ঝুমার শাশুড়ি দেবারতি ঘোষও। তিনিও স্বীকার করেছেন ছেলের অপকর্মের কথা। এদিন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “ছেলে বউমা আলাদা থাকত বাড়িতে। রবিবার দুপুরে দুজনের ঝগড়া হচ্ছিল শুনতে পাই। কিছু পরে বউমার আর্তনাদ শুনতে পাই। গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বউমা। ছেলে সেই সময় পালিয়ে যায়।”
The post পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন, পলাতক স্বামী appeared first on Sangbad Pratidin.
