সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাগ্যচক্র মানুষকে কখন কোথায় ফেলে বলা কঠিন। তবে কোনও কাজই ছোট না। সম্প্রতি একসঙ্গে এই দুই সত্যির মুখোমুখি হন বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী নিকিতা আইয়ার (Nikita Iyer)। আশ্চর্য সেই অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে করেন তিনি। যা জেনে তাজ্জব বনে গেছেন নেটিজেনরা। আসলে অফিস যেতে দেরি হচ্ছিল নিকিতার। অটো ধরতে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাস্তায়। কিন্তু পাচ্ছিলেন না। আচমকা সেখানে উপস্থিত দেবদূত! একটি অটো। কিন্তু বৃদ্ধ অটো চালক চমকে দেন নিকিতাকে। বিশুদ্ধ ইংরাজিতে প্রশ্ন করেন, কোথায় যাবেন? উত্তর দেন নিকিতা। পালটা অটোতে উঠতে বলেন অটো চালক। অটোতে করে গন্তব্যে যেতে যেতে কথোপকথন চলে যাত্রী-চালকের মধ্যে। বিশুদ্ধ ইংরাজিতে। কৌতূহল হয় নিকিতার। ব্যাপারটা কী?
৪৫ মিনিটের সফরে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয় অনেক কিছুই। নিকিতা জানতে পারেন ৭৪ বছরের ওই বৃদ্ধের নাম পাত্তাভি রমন (Pataabi Raman)। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। জীবনের পরিহাসে এখন অটো চালাচ্ছেন। অথচ এই মানুষটাই এক সময় মুম্বইয়ের (Mumbai) একটি নামী কলেজে ইংরাজির অধ্যাপক ছিলেন। ২০ বছর অধ্যাপনার পর অবসর নেন। ৬০ বছরে অবসর নিয়েও আর্থিক পরিস্থিতি ভাল ছিল না। ছিল না পেনশনও। কেন পেনশন নেই?
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারতে আসছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী! তুঙ্গে জল্পনা]
এমএ ও বিএড বৃদ্ধ জানান, আসলে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি কলেজে অধ্যাপনা করতেন। তিনি যখন চাকরি করতেন তখন মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতেন। পেনশনের তো কোনও প্রশ্নই নেই। আর এখন? এখন মাসে গড়ে ১০০০ টাকা আয়। “তা দিয়েই আমার আর আমার ‘বান্ধবী’র চলে যায়।” বলেন বৃদ্ধ। বান্ধবী? কৌতূহল হয় নিকিতার। বৃদ্ধ জানান, স্ত্রীকে তিনি বান্ধবী বলে ডাকেন। হেসে ফেলেন নিকিতা।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্যত্র, প্রতিশোধ নিতে তরুণীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী যুবক]
বৃদ্ধের সঙ্গে গল্প করতে করতে নিকিতা আরও জানতে পারেন, মুম্বইয়ের ওই কলেজ থেকে অবসর নেওয়ার পর বেঙ্গালুরুতে ফিরে আসেন বৃদ্ধ। কিন্তু হাজার চেষ্টাতেও এশহরে চাকরি জোটাতে পারেননি। শেষে অটো ড্রাইভারি। গত ১৪ বছর ধরে অটো চালাচ্ছেন। তাতেই দিন গুজরান।
এমন অভিজ্ঞতা তো রোজ রোজ হয় না, তাই এই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিলেন নিকিতা আইয়ার। নিকিতার সেই ‘গল্প হলেও সত্যি’ মন জয় করেছে নেটিজেনদের। বৃদ্ধের জন্য মন খারাপ, তবু অনুপ্রাণিতও সকলে।