সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজা যুদ্ধের মাঝেই আমেরিকা সফরে গিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বুধবার তিনি ঝাঁজাল ভাষণ দেন মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে। কিন্তু সেখানেও প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুমিছিল নিয়ে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। বক্তব্য রাখার সময় 'যুদ্ধপরাধী', 'গণহত্যাকারী' এরকম শব্দ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখানো হয় নেতানিয়াহুর দিকে। পালটা দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও। প্যালেস্টাইনপন্থী প্রতিবাদীদের 'ইরানের মূর্খ' বলে কটাক্ষ করতে দেখা যায় তাঁকে।
গাজায় মৃত্যুমিছিল নিয়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ‘বন্ধু’আমেরিকাও। কয়েকদিন আগেই তেল আভিভকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু তাতে খুব একটা আমল দেয়নি ইহুদি দেশটি। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার ওয়াশিংটনে পা রাখেন নেতানিয়াহু। বুধবার গাজা যুদ্ধ নিয়েই মার্কিন কংগ্রেসে বক্তব্য রাখেন তিনি। সাফ জানিয়ে দেন হামাসের বিরুদ্ধে পুরোপুরী জয়লাভ না করা পর্যন্ত এই লড়াই চলবে। নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে ইজরায়েল। তিনি বক্তব্য রাখছিলেন তখনই 'যুদ্ধপরাধী' লেখা প্ল্যাকার্ড উঠিয়ে দেখান ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি রাশিদা তালাইব। এমনকী পরনের কালো জামার মধ্যেও তিনি প্যালেস্টাইনের পতাকার ব্যাচ। রাশিদার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন আইন প্রণেতাও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। কিন্তু ঝাঁজাল ভাষায় তাঁদের আক্রমণ করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। ভবনের বাইরেও তখন চলছে তুমুল ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ।
[আরও পড়ুন: ‘এখনই ভারতে ফিরে যান’, কেন কানাডার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংসদকে হুমকি পান্নুনের?]
প্রতিবাদীদের 'ইরানের মূর্খ' বলে কটাক্ষ করে এদিন নেতানিয়াহু বলেন, "আমরা সবাই জানি, এই বিল্ডিংয়ের বাইরে এই মুহূর্তে যে ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। আর ইরান এতে অর্থায়ন করছে। এই প্রতিবাদীদের জন্য আমার একটি বার্তা রয়েছে। তেহরানের অত্যাচারী শাসকরা, সমকামীদের প্রকাশ্যে ক্রেন দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। মাথা না ঢাকার কারণে নারীদের হত্যা করে। আর তারাই এখন প্রশংসিত হচ্ছে, প্রচার করছে এবং অর্থায়ন করছে। ফলে আপনারা ইরানের হাতে বোকা হয়ে গিয়েছেন।" বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের হেজবোল্লা হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলের বুকে। পালটা দিচ্ছে তেল আভিভও।
এদিন, ভাষণ দেওয়ার সময় অনেকেই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান নেতানিয়াহুকে। কিন্তু প্রাক্তন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি, রাশিদা-সহ অনেকেই উঠে দাঁড়াতে অস্বীকার করেন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহু দেখা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনে ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে। গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে কথা হতে পারে তাঁদের মধ্যে। এর পর শুক্রবার ফ্লোরিডায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন নেতানিয়াহু। তাঁদের বৈঠকেও উঠে আসবে গাজা যুদ্ধের প্রসঙ্গ। তবে গাজা যুদ্ধ যে এখনই থামছে না আমেরিকার মাটি থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন নেতানিয়াহু। ওয়াশিংটনের চাপের মুখেও তিনি নতি স্বীকার করবেন না।