নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ফের রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বিভাস অধিকারী। বুধবার নলহাটির শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘোষণা করেন তিনি। খাতায় কলমে তৃণমূলের নলহাটি (Nalhati) দুই নম্বর ব্লকের সভাপতি বিভাস।
তিনি জানান, পরবর্তী জীবনে শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকুলচন্দ্র (Anukul Chandra) ও তাঁর নির্মিত আশ্রম নিয়ে সময় কাটাতে চান তিনি। যদিও অনুকুল ঠাকুরের আশ্রমের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রীকৃষ্ণপুরে বিভাসবাবুর প্রতিষ্ঠিত আশ্রম বা তাঁর সৎসঙ্গের সঙ্গে দেওঘরের মূল আশ্রমের কোনও যোগ নেই। এভাবে ক্রমাগত মিথ্যা প্রচার চলতে থাকলে তারা আইনি পদক্ষেপ করতে পারে।
[আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবারই বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতি, সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে]
বিভাসের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে রীতিমতো ধন্দ রয়েছে। খাতায় কলমে তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি। কয়েক মাস আগেই নলহাটির ব্লক সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ইস্তফা দলীয় রীতি মেনে হয়নি। দলের জেলা সভাপতিকে ইস্তফাপত্র না দিয়ে পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য্যকে পদ ছাড়ার চিঠি দেন বিভাস (Bibhas Adhikari)। আবার তিনি নিজেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটের আগে এই রাজ্যের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র খুবই সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। বিভাসের দাবি, নলহাটির আশ্রমে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বেশ কয়েকবার গিয়েছেন। বিভাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পরও কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে দেখতে যান। যদিও তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। খাতায় কলমে তিনি তৃণমূলেরই ব্লক সভাপতি। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় এদিন ফের ঘটা করে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রামপুরহাট মহকুমার তৃণমূল পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য্য বলেন, উনি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। আমরা ওই ব্লকে তিনজন কার্যকরী সভাপতি করে দল চালাচ্ছি।
[আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবারই বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতি, সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে]
এদিকে বিভাসের ঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের নামে আশ্রম চালানো নিয়েও বিতর্ক চলছে। অনুকুল ঠাকুরের সৎসঙ্গের জেলা সভাপতি অনিল চক্রবর্তী এদিন দাবি করেছেন, ‘জেলায় যে ঠাকুর অনুমোদিত দেওঘরের স্বীকৃত ৪০টি সৎসঙ্গ কেন্দ্র আছে এবং ৫০০ সৎসঙ্গ উপযোজনা আছে তার সঙ্গে বিভাস অধিকারীর কোনও যোগ নেই’। যদিও বিভাসবাবুর পালটা দাবি , ‘অনিল চক্রবর্তী একজন জাল ভক্ত। তবে তার মন ভাল। ওটাও এনজিও। আমারটাও এনজিও’। ঠাকুর বলেছেন, ধর্মে গণতান্ত্রিকতার কোনও জায়গা নেই। এককেন্দ্রিকতায় ধর্ম এগিয়ে চলে।’ সৎসঙ্গের জেলা সভাপতি অনিল চক্রবর্তী জানান, ‘ কেউ রামকৃষ্ণের নামে দোকান খোলে তার দায় কি বেলুড়মঠ নেবে? আমরা তাঁকে উপেক্ষা করি।’