সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পর থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এই রিপাবলিকান নেতার সমর্থকরা। সোশাল মিডিয়ায় আমেরিকার পতাকার উলটো ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে মুখ খুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আদালতের নির্দেশ নিয়ে যেভাবে সকলে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন, জাতীয় পতাকার অপমান করছেন তা অত্যন্ত ভয়ংকর বলেই জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে (Donald Trump) দোষী সাব্যস্ত করে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত। ১২ জন জুরির সম্মতিতেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। বিচারপতি হুয়ান মের্চান জানিয়েছেন, আগামী ১১ জুলাই ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করবে আদালত। সবমিলিয়ে মোট ৩৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ট্রাম্প। এই নির্দেশ দেওয়ার পরই জাতীয় পতাকা উলটে সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা। সেই তালিকায় রয়েছেন, রিপাবলিকান প্রতিনিধি মার্জোরি টেলর গ্রিন থেকে শুরু করে মার্কিন গায়ক জেসন অ্যাল্ডিয়ান।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে উসকে রাশিয়ায় ‘ছদ্মবেশে’ আক্রমণ আমেরিকারই! কী চাইছেন বাইডেন?]
এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের একহাত নিয়েছেন বাইডেন। প্রতিবাদের নামে যেভাবে দেশের পতাকার অপমান করা হচ্ছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেছেন, "যা হচ্ছে তা খুবই বিপজ্জনক। আদালতের নির্দেশ পছন্দ হয়নি বলে ট্রাম্পের সমর্থকরা যা করছেন তা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা আর কিছুই নয়। তাঁরা খুবই বেপরোয়া মনোভাব দেখাচ্ছেন।" এদিকে বিভিন্ন ট্রাম্পপন্থী ওয়েবসাইটেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সেখানে সকলেই ডেমোক্রেট সমর্থক, ওই ১২ জন জুরি ও বিচারপতির উপর হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছেন। যা নিয়ে সতর্ক মার্কিন প্রশাসন।
আদালতের রায় ঘোষণার পরেই নিজের সোশাল মিডিয়ায় বিশেষ পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাতর আর্জি, “ওরা আমার বাড়িতে হানা দিয়েছে, আমাকে গ্রেপ্তার করেছে, দাগি আসামীদের মতো আমারও মাগশট ছবি তুলেছে। এবার আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে দিল। সকলের কাছে আমার আবেদন, আজকের দিনটা ফুরনোর আগেই ১ কোটি দেশপ্রেমী জনতা একজোট হোন। তহবিলে দান করুন।” এই পোস্টে নিজেকে রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বড় অঙ্কের অর্থ জোগাড় করে ফেলেছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা।
[আরও পড়ুন: ‘দেশপ্রেমিকরা জাগুন, আর্থিক সাহায্য করুন’, সমর্থকদের কাছে হাত পাতলেন ট্রাম্প]
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুলাই সরকারিভাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে রিপাবলিকান পার্টি। ইতিমধ্যেই পদপ্রার্থী হওয়া প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু ১১ জুলাই সাজা ঘোষণা হওয়ার পরে তিনি আদৌ নির্বাচনে লড়তে পারবেন কিনা সেই নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড পেতে পারেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেক্ষেত্রে চলতি বছরে হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রত্যাবর্তন যথেষ্ট কঠিন বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে স্টর্মির সঙ্গে ট্রাম্পের যৌন সম্পর্ক হয়েছিল বলে দাবি। অভিযোগ, বিষয়টা চেপে দিতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্টর্মিকে এক চুক্তিতে সই করানো হয়েছিল। এমনকী অনেক অর্থও দেওয়া হয়েছিল। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্টর্মি যা অভিযোগ করেছেন, তা বার বারই খণ্ডন করেছেন বর্ষীয়ান নেতা। অবশেষে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার।