ধীমান রায়, কাটোয়া: “যে নিজের বাচ্চা মেয়েকেও অপরাধী তৈরি করে দেয়, তার বাবা না হওয়াই ভাল।” কাটোয়ায় এক প্রকাশ্য সমাবেশে যোগ দিয়ে বীরভূমের তৃণমূল (TMC) নিজের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Basu)। সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-য়ের (SFI)পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির ৩৭ তম সম্মেলন ছিল কাটোয়ার নজরুল মুক্তমঞ্চে। শনিবার বিকেলে সমাবেশে যোগ দেন প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা এসএফআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বিমান বসু।
ছাত্র সংগঠনের সমাবেশের বক্তব্যে তিনি রাজ্য সরকার তথা শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করেন।শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল অবস্থা ও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন বিমানবাবু। নিশানায় ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। নাম না করেই কটাক্ষ করে বলেন, “এখন একজন জেলে রয়েছেন। তার নাকি মাথায় অক্সিজেন কম যায়। মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে বীরভূমে যে কত মাটি চুরি হয়েছে। তার নামে ১৭ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। তিনি জেলে থেকেই এমন করে কথা বলছেন যেন রাজভবনে রয়েছেন। তাকে আবার বীরের সম্মান দিয়ে জেল থেকে নিয়ে আসার কথা বলা হচ্ছে।” অনুব্রতর নাম না করে বিমানবাবু আরও বলেন, “তার মেয়েও প্রাইমারিতে চাকরি পেয়েছে। কিভাবে পেয়েছে জানিনা। একদিনের জন্যও স্কুলে যায় না। ঘরে বসে বেতন পায়। যে বাবা নিজের বাচ্চা একটা মেয়েকে অপরাধী তৈরি করছে তার বাবা না হওয়াই ভাল।”
[আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযানের মিছিল ভরাতে বিপুল খরচ বিজেপির, ভাড়া করা হচ্ছে ৭টি ট্রেন!]
বিমান বসুর আরও বক্তব্য, “এই রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষা, লোয়ার প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয়, থেকে মেডিক্যালে ভরতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে যে অনৈতিক কাজ হয়, তা আগে কোনওদিন হয়নি। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যা হচ্ছে তা ভাবা যায় না। যারা টেট (TET) পাশ করেছে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। যারা ফেল করে তারা লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়ে যায়। একজন মন্ত্রীর মেয়ে কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়ে গিয়েছিল। যার পাওয়ার কথা সে পায়নি। মন্ত্রীর মেয়েকে বেতনের টাকা ফেরত দিতে হল। ভারতবর্ষের কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। তৃণমূলের আমলে জালজোচ্চুরি করে টাকা কামানোটাই আসল।”
[আরও পড়ুন: জোম্যাটো ডেলিভারি বয়ের গোপনাঙ্গে কামড় কুকুরের, ভাইরাল রক্তাক্ত ভিডিও]
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এদিন তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপিকেও একহাত নেন। তিনি বলেন, “বিজেপি এখন দাবি করে, তারা নাকি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এটা পুরো মিথ্যা কথা। আরএসএস, জনসংঘ, বিজেপি কোনওদিন স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনও ভূমিকা নেয়নি।”
এসএফআইয়ের সমাবেশে হাজির ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, রাজ্য কমিটির সদস্য শিউলি ঘোষ, বিশ্বজিৎ হাজরা। এছাড়া ছিলেন সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক-সহ অন্যান্যরা।