বাবুল হক, মালদহ: বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও ভারতে জাল নোট পাচারের রমরমা কারবার চলছে। অশান্তির সুযোগে বেড়েছে পাচারের গতিও। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে জাল নোট পাচারের সঙ্গে ওপারের 'জঙ্গি' যোগ থাকার বিষয়টিও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বৈষ্ণবনগর থানার বাখরাবাদ এলাকা থেকে আট লক্ষ টাকার জাল নোট সমেত এক পাচারকারীকে গ্রেপ্তারের পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে বলে সূত্রের খবর। শনিবার, মালদহের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'বাংলাদেশ থেকেই মালদহ সীমান্ত দিয়ে জাল নোট ঢোকানো হচ্ছে ভারতে। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।' বৈষ্ণবনগরের বাখরাবাদ থেকে ধৃত পাচারকারীকে জেরা করে বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের যোগ থাকার বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ সুপার বলেন, "ধৃত ব্যক্তিকে আমরা দফায় দফায় জেরা করেছি। সে জানিয়েছে এই কাজে তার সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকজনের যোগ রয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।"
তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ থেকে এপারে জাল নোট পাঠানোর উৎস, রুট, করিডর, কিছুই বদলায়নি। কখনও পদ্মা হয়ে গঙ্গার জলপথে ঢুকছে। কখনও আবার সিমান্ত টপকে ঢুকছে স্থলপথে। ওপার থেকে এপারে জালে নোট আসার পরিমাণ ইদানিং বেড়ে গিয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাংশের মতে, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভারতে জাল নোট পাচারের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে ওপারের 'জঙ্গি'রা।
চলতি মাসেই মালদহ জেলা পুলিশ সীমান্ত এলাকা থেকে ৪২ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এই একটা মাসেই আমরা ৪২-৪৩ লক্ষ টাকার জাল নোট পেয়েছি। চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ফের বাখরাবাদ থেকে ৮ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার হল। এই ঘটনায় আনারুল শেখ নামে এক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। তার মোবাইল ও বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সে জেরায় জানিয়েছে তার সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকজনের যোগ রয়েছে। তারাই ওপার থেকে এপারে জাল নোট পাঠানোর কাজ করছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।" পুলিশ জানিয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ জাল নোট ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করে আনারুল। যা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হত। তার আগেই সে পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায়।
