রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাম আমলে চিরকূটের মাধ্যমে সুপারিশ পাঠিয়ে চাকরি হত। অভিযোগ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার SFI-এর সমাবেশে দাঁড়িয়ে সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে একপ্রকার বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করে ফেললেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Bose)। বিমানবাবুর দাবি, বামফ্রন্টের আমলে অনেক বামপন্থীরাও চাইতেন পার্টির সুপারিশে শিক্ষকতার চাকরি পেতে। মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের বিষয় সুনিশ্চিত করতে গিয়ে দলের মধ্যে তথা বামপন্থীদের মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল সরকারকে।
বিমানবাবুর দাবি, “বাম আমলে সুপারিশে কোনও চাকরি হয়নি। তবে সেই সময় অনেক বামপন্থীরাও চাইতেন পার্টির সুপারিশে চাকরি পেতে। আর তা না হওয়ায় বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষও ছিল। তাঁরা বলতেন চাকরির বেলায় মেধা আর ঝান্ডা ধরবে গাধা?” বিমান বসু এদিন আরও দাবি করেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বামফ্রন্ট (Left Front) আমলে চিরকূটে চাকরি দেওয়া হতো। কিন্তু বাম আমলে চিরকূট দিয়ে চাকরি হয়নি। ১৯৭৩ সালে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে চিরকূটে চাকরি হতো। সেই সময়ে সিগারেটের প্যাকেটে নাম সুপারিশ করে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে পাঠানো হতো।”
[আরও পড়ুন: পুলিশ সেজে মাছ ব্যবসায়ীর ১০ লক্ষ টাকা লুট! অভিযোগের ভিত্তিতে মুচিপাড়ায় গ্রেপ্তার ৫]
তবে চিরকূটে চাকরি নিয়ে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমকে দুষলেও সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যু ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) গ্রেপ্তারির ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান কংগ্রেসকেও কার্যত ক্লিনচিট দেন। বিমান দাবি করেন, বামফ্রন্ট সরকার বা কংগ্রেস (Congress) সরকারের আমলে কখনও এই ধরণের ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, “স্লোগান দিয়ে বলা হয় ওয়ান-টু-থ্রি-ফোর, তৃণমূলের সবাই চোর। কিন্তু একথাও সত্য, তৃণমূলের সবাই চোর নয়।”
[আরও পড়ুন: ‘নজর রাখুন, আজ বড় কিছু হতে পারে’, সুকান্তর মন্তব্যে তুঙ্গে জল্পনা, কী বলছে তৃণমূল?]
শিক্ষা-দেশ ও সংবিধান বাঁচাওয়ের দাবিতে, কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতি বাতিল-সহ আরও নানা ইস্যুতে এদিন কলেজ স্ট্রিটে এসএফআইয়ের (SFI) ছাত্র সমাবেশ ছিল। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতব্যাপী ছাত্র জাঠার শেষে এই সমাবেশ। একমাস ধরে জাঠা চলে। সব জাঠা মিলিত হয় এদিন বইপাড়ায়। এসএফআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বিমান বসু ও সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাসের হাতে বিকল্প শিক্ষানীতির খসড়া তুলে দেন প্রতিকূর রহমান, সৃজন ভট্টাচার্য প্রমুখ ছাত্র নেতারা। আগামী দিনে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সামনা সামনি লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে এসএফআইয়ের তরফে। দাবি তোলা হয়েছে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেরও।