ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী নতুন বছরের প্রথম দিনই বিশ্বভারতীকে (Vishva Bharati) দেওয়া রাস্তা ফিরিয়ে নেওয়া হল রাজ্য সরকারের তরফে। শুক্রবার সকালেই কালীসায়র থেকে উপাসনা মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দখল নিল বীরভূম (Birbhum) জেলা প্রশাসন। এর জেরে সাধারণ মানুষের প্রবেশে আর বাধা রইল না। তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থে মোতায়েন করা হল পুলিশ। দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে রাস্তা নতুন করে উদ্বোধন করা হল। রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে আনন্দে শামিল হলেন স্থানীয় বাসিন্দা, আশ্রমিকরা।
সোমবার বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন, বিশ্বভারতীকে পিডব্লুডি-র রাস্তার একটি অংশ দেওয়া হয়েছিল, তা আবার ফিরিয়ে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। কারণ, ওই রাস্তায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সাধারণের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিল। তাতে অসুবিধায় পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের আবেদন মেনে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তাটি ফের পূর্ত দপ্তরকেই ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর নতুন বছরের শুরুতেই সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সে রাস্তার দখল নিল পুলিশ তথা বীরভূম জেলা প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: রাতারাতি উধাও বিজেপি কার্যালয়! বুলডোজার চালিয়ে ভাঙায় অভিযোগের তিরে তৃণমূল]
রাস্তা দুটি সংস্কারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ২২ কোটি টাকা মঞ্জুর করে রাজ্য সরকার। উপাসনা মন্দির থেকে কালীসায়র মোড় পর্যন্ত রাস্তাটির জন্য ৬ কোটি এবং শ্যামবাটি থেকে শিক্ষাভবন মোড় পর্যন্ত রাস্তার জন্য ১৬ কোটি । বর্তমানে শ্যামবাটি থেকে শিক্ষাভবন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য হয়ে আসার পর উপাসনা মন্দির থেকে কালীসায়র মোড় পর্যন্ত রাস্তাটিতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করে বিশ্বভারতী। বর্তমানে উপাসনা মন্দিরের কাছে রাস্তার কিছু অংশ খালি রেখে ব্যারিকেড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল করে বিশ্বভারতীর নির্দেশ অনুসারে। এই নিয়ে অর্মত্য সেন-সহ একাধিক আশ্রমিক এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছিলেন।
[আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ডুয়ার্স ভ্রমণে ব্রিটেনফেরত ৮ জন, দায়িত্ববোধ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন]
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতীর জায়গার মধ্যে টিভি সেন্টারের কাছে সুরশ্রীপল্লী-বিশ্বভারতীর মধ্যে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপর পাঁচিল তোলার কাজ শুরু করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এর ফলে এই রাস্তা দিয়ে কোনও গাড়ি বা বাইক চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু শুক্রবার সকালে সেই কাজ বন্ধ করে দেয় বীরভূম জেলা প্রশাসন। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজ্য রাস্তা ফেরত চাইতেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রতিশোধ নিতেই এই রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছিল।