রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একদিকে সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বিক্ষোভের আশঙ্কা বাড়ছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের। অন্যদিকে আবার অপসারিত জেলা সভাপতিদের কম গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে পুনর্বাসন দেওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। ফলে সংগঠন সাজাতে গিয়ে কোন্দল আর বিক্ষোভের জেরে টালমাটাল রাজ্য বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব।
এদিকে, মাত্র তিনদিনের জন্য সভাপতি থাকার পর বুধেই অপসারিত হলেন বিজেপির যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কুন্তল চৌধুরী। বুধবার বিকেলে রাজ্য বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, যাদবপুরের জেলা সভাপতি হলেন মনোরঞ্জন জোতদার। কিন্তু এত কম সময়ের মধ্যে কেন জেলা সভাপতি বদল হল? এ প্রসঙ্গে সেভাবে কিছু খোলসা করতে চাননি রাজ্য বিজেপি নেতারা। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য শুধু জানিয়েছেন, ‘‘এটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়।’’ আর অপসারিত হওয়া জেলা সভাপতি কুন্তল চৌধুরী প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, ঘনিষ্ঠ মহলে খবর তিনি দলের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ।
[আরও পড়ুন: চোখ টেপা থেকে ফ্লাইং কিস, নিজের ‘ছেলেমানুষি’ কাজে কি লঘু হচ্ছেন ‘নেতা’ রাহুল?]
গেরুয়া শিবিরের মধ্যেও প্রশ্ন, রাজ্য নেতৃত্ব কি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন? তা না হলে জেলা সভাপতি কাউকে ঘোষণা করে তিনদিনের মধ্যে তাঁকে অপসারণ করা হল কেন? লোকসভা (Lok Sabha Election 2024) এলাকাভিত্তিক সাংগঠনিক জেলা করতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির জেলা কমিটির সংখ্যাও বেড়েছে। সেই মতো যাদবপুরকেও নতুন সাংগঠনিক জেলা হিসেবে সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছিল। গত রবিবারই নয়া জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণা করে সেই তালিকায় নয়া জেলা যাদবপুরের সভাপতি করা হয়েছিল কুন্তল চৌধুরীকে। এখন প্রশ্ন, ক্ষোভ সামাল দিতে অন্যান্য অপসারিত জেলা সভাপতিদের মতো কুন্তলকেও কি ফের দলের অন্য কোনও কমিটিতে পুনর্বাসন দেওয়া হবে?
[আরও পড়ুন: টমেটোর মালা গলায় রাজ্য়সভায় আপ সাংসদ! কী প্রতিক্রিয়া চেয়ারম্যান ধনকড়ের?]
এদিকে, দলের মধ্যে ক্ষোভ সামাল দিতে জেলা সভাপতির পদ থেকে যাদের অপসারণ করা হয়েছিল, মঙ্গলবার রাতেই তাদের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, জেলা সভাপতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর অনেকের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ক্ষোভ সামাল দিতেই রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করে সদ্য বেশ কয়েকজন অপসারিত জেলা সভাপতিকে পুনর্বাসন দিয়ে কার্যত দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে যে ১৮ জনের নাম ঘোষণা করে তাদের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা, বারাসত সাংগঠনিক জেলার সদ্য প্রাক্তন সভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরী, তাপস মিত্র-সহ অন্যান্যরা। অনেকে যারা সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করছিলেন যাঁদের জেলা সভাপতি থেকে সরিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটিতে দেওয়া হয়েছে, ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁদের অনেকের কথায়, এটা তো সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হল।