ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: একটা বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল পালটে দিয়েছে অনেক কিছুই। ভোটের আগে রাজনৈতিক শিবির বদল করেছেন অনেক নেতাই। সঙ্গে কর্মী, সমর্থকরাও। তবে ভোটের ফলপ্রকাশ এলোমেলো করে দিয়েছে বহু সমীকরণ। এবার অনেকেই পুরনো দলে ফিরতে চান। সেই তালিকায় তৃণমূলত্যাগী কর্মী, সমর্থকদের সংখ্যাই বেশি। যাঁরা বিজেপি (BJP) ছেড়ে ফিরতে মরিয়া ঘাসফুল শিবিরে, তার আবার নানা পদ্ধতিও আছে। তবে সবচেয়ে মজাদার পথ বোধহয় দেখালেন বীরভূমের (Birbhum) বিপ্রটিকুরির একদল সমর্থক। রীতিমতো মাইকিং করে তাঁরা তৃণমূলে ফেরার আবেদন জানালেন। মঙ্গলবার তাঁদের এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ল।
মঙ্গলবার বেলার দিকে লাভপুরের বিপ্রটিকুরি গ্রামে পা রাখতেই চোখে পড়ল অন্য এক দৃশ্য। দেখা গেল, একটি টোটোয় চড়ে বেশ কয়েকজন মাইকিং করতে করতে যাচ্ছেন। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে তাঁদের বার্তা। বলছেন, ”আমরা তৃণমূলের বদনাম করেছি। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলাম। ভুল করেছি। আর করব না। এবার আমরা তৃণমূলে ফিরতে চাই।” গ্রাম জুড়ে প্রায় এই কথাই ঘোষণা করা হচ্ছে। কার নেতৃত্বে তাঁরা এই পন্থা অবলম্বন করেছেন, তা অবশ্য অজ্ঞাত। যদিও জেলা বিজেপির মত, স্বেচ্ছায় কেউ এই কাজ করেনি। চাপে পড়ে করেছে। বীরভূমের জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহার বক্তব্য, ”অনেকেই নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। শাসকদল না করলে কোনও কিছুই হচ্ছে না। ওরা তাই বাধ্য হয়ে এসব করছে। নিজেরা স্বেচ্ছায় করেনি।” তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: লিলুয়া কাণ্ডে গ্রেপ্তার ৫, মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ]
তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর সাংগঠনিক রদবদল করতে গিয়ে দলত্যাগীদের নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা শুনিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি সাফ জানিয়েছেন, “যাঁরা ফিরতে চান, ফিরুন না। কে বারণ করেছে? ওয়েলকাম।” অর্থাৎ মান-অভিমান ভুলে পুরনো সৈনিকদের কাছে টেনে নিতে যে কোনও সমস্যা নেই, সেই বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যদিও ইচ্ছাপ্রকাশের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনও দলত্যাগী তৃণমূলে ফিরে এসেছেন, এমনটা হয়নি। অর্থাৎ ফেরানোর বার্তা দিয়েও সহজে কাউকে শিবিরে ঠাঁই দেওয়া হচ্ছে না, তা স্পষ্ট। কিন্তু বীরভূমের বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা এদিন যেভাবে প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করলেন, তাতে কি কাজ হবে? সংশয় থাকছে।