স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিধানসভার নীতির বিরোধিতা করে তৃণমূলের সঙ্গে দাবি আদায়ে দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাব দিলেন পুরদলের বিজেপি নেতা সজল ঘোষ (Sajal Ghosh)। এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুরসভার বাজেট অধিবেশনে মঙ্গলবার মেয়রের ঠিক আগেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সজল বলেন, ‘‘আপনার বলছেন, প্রধানমন্ত্রী একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছেন। চলুন সবাই মিলে একটা সর্বদল বৈঠক করে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাতে দিল্লিতে যাই।’’ এরপরই তৃণমূলের প্রতি নিজের আন্তরিক মনোভাব তুলে ধরে কলকাতার বিজেপির পুরপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘আমিও একজন কাউন্সিলর, আমিও মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পরিবারের একজন সদস্য। আমিও চাই সকলে মিলে চলুন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে গিয়ে কী কী বঞ্চনা হচ্ছে তা নিয়ে দাবি জানিয়ে আসি।’’
সজলের এমন সর্বদলীয় দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাব অবশ্য পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলার দাবি জানাতে বিধানসভায় একটি সর্বদলীয় প্রস্তাব পাস হয়েছিল। প্রথমে সমর্থন করে যাওয়ার আগে বিজেপির সদস্যদের নাম জানাতে বলার সময় পিছু হটেছিলেন বিরোধী দলনেতা। পুরসভাগতভাবে গিয়ে লাভ নেই। বরং বিধায়করা মিলে বাংলার বঞ্চনার দাবি নিয়ে দিল্লি গেলে লাভ হত।’’
[আরও পড়ুন: নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলার ঘটনায় তৃণমূল সমর্থকদের ক্লিনচিট দিল জেলা পুলিশ]
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক ও পরিষেবাকেন্দ্রিক প্রকল্প ‘খারাপ’ দেখেন, তীব্র সমালোচনাও করেন। কিন্তু এদিন পুরসভার বাজেট অধিবেশনে বলতে উঠে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ‘টক টু মেয়র’ পরিষেবায় ফিরহাদ হাকিম বা কোভিডে পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবার ভূমিকায় ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে ‘টক টু মেয়র’ যে সরাসরি তৎক্ষণাৎ মানুষের সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছেন ফিরহাদ, তাও উল্লেখ করেন বিজেপি কাউন্সিলর।
অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ-সুসম্পর্ক রেখে চলা সজল বক্তব্য রাখতে দিয়ে পোডিয়ামে দাঁড়াতেই মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের তির্যক মন্তব্য ছিল, ‘‘প্লেয়ার ভাল, কিন্তু ভুল দলে খেলছে।’’ স্বয়ং চেয়ারপার্সন মালা রায়ও আগাম সজলকে স্মরণ করিয়ে দেন, ‘‘তোমার বাবাও এই হাউসে বহুদিন কাউন্সিলর ছিলেন, তাই তাঁর সম্মানের কথা ভেবে গঠনমূলক প্রস্তাব দিয়ে বলবে।’’
কিন্তু চেয়ারপার্সনের সর্তকবার্তা যে একেবারে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার উলটোপথে হেঁটেই ‘মেয়রের পরিবারের একজন সদস্য’ হিসাবে দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাব দেবেন তা ভাবতে পারেননি বিজেপির অন্য কাউন্সিলরও। তবে সজলের প্রস্তাব নিয়ে শুভেন্দুর ভূমিকার ইঙ্গিত করে মেয়র ফিরহাদের কটাক্ষ, ‘‘আসল কাজের সময় নিজেরা ‘ব্যাকআউট’ করে এখন পুরসভায় এসব বলছেন।’’ পুরসভার বাজেট অধিবেশনে সোম ও মঙ্গলবার, দু’দিনই সজল ঘুরে ঘুরে সমস্ত তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গেই হাসিঠাট্টা ও রসিকতা করেছেন। আবার ১০০ দিনের পাওনা টাকা নিয়ে সোমবার তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তীর সঙ্গেও বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন।