shono
Advertisement

কৃষ্ণগহ্বরে সব বিলীন নয়, তরতাজা থাকে স্মৃতি! সাম্প্রতিক গবেষণায় হকিংয়ের থিওরিকে চ্যালেঞ্জ

নতুন করে লিখতে হবে পদার্থবিজ্ঞানের থিওরি?
Posted: 06:21 PM Mar 18, 2022Updated: 06:54 PM Mar 18, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশাল ভারী শরীর, তেমনই ক্ষিপ্র গতি। এমনই দুই নক্ষত্রের সংঘর্ষ ঘটলে বিরল এক ঘটনার সাক্ষী থাকে মহাবিশ্ব। তৈরি হয় কৃষ্ণগহ্বর (Black Hole) যেখান থেকে আলো যাতায়াতের এতটুকু ছিদ্রও থাকে না, যেখানে কোনও ঘটনাই বস্তুত ঘটে না, সব নিমেষে বিলীন হয়ে যায়। আইনস্টাইন-হকিংদের গবেষণা অনুযায়ী কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে সাধারণ ধারণা এমনই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, গবেষণা আরও এগনোর সঙ্গে সঙ্গে আইনস্টাইনদের তত্ত্বের জোর কমছে ক্রমশ। সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, মোটেই সব গিলে ফেলে না কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল। ওই বিধ্বংসী সংঘর্ষের পর সেখানেও রয়ে যায় স্মৃতি। এই তত্ত্ব সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হলে কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানকে (Physics) অন্য আলোয় ফেলে দেখতে হবে, মনে করছে বিজ্ঞানী মহলের একাংশ।

Advertisement

ব্যাপারটা একটু গোড়া থেকে বুঝে নেওয়া যাক। প্রকাণ্ড নক্ষত্রগুলো (Heavy Stars) যখন প্রচণ্ড মহাকর্ষজ টানে পরস্পরের দিকে ধেয়ে গিয়ে প্রবল সংঘর্ষ ঘটায়, তখন সেই দশাই কৃষ্ণগহ্বর তৈরির সূচনা মুহূর্ত বলে ধরে নেওয়া হয়। এত প্রবল ভরকেন্দ্রে সমস্ত কিছু লুপ্ত হয়ে যায়। এর মারাত্মক মহাকর্ষজ টান এড়িয়ে বেরতে পারে না কেউ। এমনকী আলোও গিলে ফেলে সেই ব্ল্যাক হোল। আর সেই কারণেই তার নাম কৃষ্ণগহ্বর। এই ঘটনাকে তারাদের মৃত্যু এবং পুনর্জন্ম বলেও উল্লেখ করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। বলা হয়, নতুন তৈরি এই ব্ল্যাক হোলে পুরনো নক্ষত্রদের কোনও ধর্মই আর থাকে না, তা স্রেফ মৃতদেহের মতো।

[আরও পড়ুন: মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুর স্ত্রীকে আবির মাখানো নিয়ে বচসা, রিজেন্ট পার্কে গুলিতে খুন যুবক!]

কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে অন্য কথা। বলা হচ্ছে, ব্ল্যাক হোল পূর্ব স্মৃতি ধরে রাখে। মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির দুই অধ্যাপক জেভিয়ার ক্যালমেট, রবার্তো ক্যাসাডিও, স্টিফেন সু’র যৌথ গবেষণা বলছে, কৃষ্ণগহ্বর অনেকটা ছোটদের মস্তিষ্কের মতো। জন্মের আগের অনেক কিছুই মনে রাখতে পারে। অর্থাৎ যে দুই নক্ষত্র সংঘর্ষ ঘটিয়ে ব্ল্যাক হোলের জন্ম দিল, সে সম্পর্কে অনেক তথ্যই মনে রাখতে পারে। অধ্যাপক ক্যালমেটের কথায়, “আমাদের গবেষণা, পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে কোয়ান্টাম তত্ত্বের (Quatam Theory) অঙ্ক নতুন করে কষতে হবে। ব্ল্যাক হোলে কিছু ঢুকে পড়লে আর তা বেরিয়ে আসতে পারে না, এমনটা সত্যি নয়। গবেষণা বলছে, ওই হোলের গায়েই তথ্যের ভাণ্ডার রয়ে গিয়েছে।”

[আরও পড়ুন: সমকামী প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে যৌনাচার, শিক্ষকের কীর্তিতে তোলপাড় ডায়মন্ড হারবার]

১৯৭৬ সালে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং (Stephen Hawking) ‘ব্ল্যাক হোল প্যারাডক্স’ সমাধানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। ব্ল্যাক হোলে ঢুকে সব কি সত্যিই বিলীন হয়ে যায় নাকি অন্য গন্তব্যে পৌঁছয়? নিজের তত্ত্বে এই প্রশ্নও তুলে দিয়েছিলেন তিনি। যুগের পর যুগ ধরে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন পদার্থবিজ্ঞানীরা। এবার কি সেই প্রতীক্ষিত উত্তরের খোঁজ দিল ক্যালমেট, ক্যাসাডিও, স্টিফেনের যৌথ গবেষণা? তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে হয়তো আরও খানিকটা পরে। তবে তা যদি সত্যিই হয়, তবে নতুন করে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের বেশ কিছু তত্ত্ব রচনা করতে হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement