সুকুমার সরকার, ঢাকা: হাসিনা সরকারকে বিপাকে ফেলতে মার্কিন ভিসা নীতিই ‘হাতিয়ার’ বিএনপির। এবার আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মী-সহ প্রায় ১০০ জনের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে খালেদা জিয়ার দল।
বলে রাখা ভালো, নির্বাচনে কারচুপি ও হিংসার অভিযোগে বিদ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকার। বিরোধীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে লাগাতার। সেই বিষয়ে মুখ খোলে আমেরিকা। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আগেই ওয়াশিংটন কড়া হুমকি দিয়েছে, হিংসায় অভিযুক্তদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। ওয়াশিংটনের এই ভিসা নীতিকেই আওয়ামি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে হাসিনা সরকারের উষ্ণ সম্পর্ক মোটেও সুনজরে দেখছে না বাইডেন প্রশাসন। তাই কলকাঠি নেড়ে আওয়ামি সরকারকে চাপে রাখছে আমেরিকা।
এই প্রেক্ষাপটে অন্তত এক ডজন বিষয়কে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতারা শতাধিক ব্যক্তির নাম, ঠিকানা দিয়ে মার্কিন দূতাবাসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যে সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আবেদন করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বিএনপি নেতা শহিদউদ্দিন চৌধুরী অ্যানির গ্রেপ্তারি। অভিযোগ করা হয়েছে, অ্যানিকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছে। এজন্য ৬ জন ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়েছে। বিএনপির শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
[আরও পড়ুন: আমেরিকাকে তোপ দেগে ভোটমুখী বাংলেদেশের পাশে রাশিয়া, দিল্লিতে হাসিনার ‘দূত’]
বিএনপি জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। আমেরিকার কাছে নিয়মিত অভিযোগ জানাতে বিএনপি ইতিমধ্যে একটি সেল তৈরি করেছে। এই সেলের নেতৃত্বে রয়েছেন শামা ওবায়েদের। এই সেলের প্রধান কাজ হল কোথাও কেউ গ্রেপ্তার হলে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও পদক্ষেপ নিলে লিখিত আকারে এবং সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ মার্কিন দূতাবাসে পাঠিয়ে দেওয়া। তবে এধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকা কোনও পদক্ষেপ নিয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
[আরও পড়ুন: ক্ষোভ থাকলেও ভরসা হাসিনাতেই, ভোটযুদ্ধে উন্নয়নই হাতিয়ার মুজিবকন্যার]
তবে আমেরিকার তরফে বলা হয়েছে, তারা নিজস্ব উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহ করবে এবং বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করবে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে গিয়েছেন। সফর শেষে তিনি বলেছেন, আগামী তিনমাস বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করবে আমেরিকা। সেক্ষেত্রে দেখার বিষয় হল বিএনপির এই সমস্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন কোনও পদক্ষেপ করে কি না।