shono
Advertisement

Breaking News

ভারতীয় পণ্য বর্জন, পাকিস্তানের কায়দায় বিএনপির ভারত বিরোধিতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

বিএনপি প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। দলটির এই অবস্থানের সঙ্গে মালদ্বীপের ভারত বিরোধিতার মিল দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের অনেকেই।
Posted: 08:27 PM Mar 23, 2024Updated: 08:29 PM Mar 23, 2024

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান (Pakistan) গোয়েবলসীয় কায়দায় ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছিল। এবার ঠিক সেভাবেই কার্যত পাকিস্তানের পথ অনুসরণ করে ভারতের বিরোধিতা শুরু করেছে বিএনপি (BNP)। নির্বাচনে জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি যখন কোনও রাজনৈতিক ইস্যু খুঁজে পায় না, তখনই ভারত বিরোধিতার ইস্যু সামনে নিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও করেছে, এখন শেখ হাসিনার আমলেও তাই করছে। শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলীয় কার্যালয়ে ইফতার ও ইদের জিনিসপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন আওয়ামি লিগের (Awami League) সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Advertisement

এদিকে বিএনপি প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। দলটির এই অবস্থানের সঙ্গে মালদ্বীপের ভারত বিরোধিতার মিল দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের অনেকেই। তাঁরা বলছেন, দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি হতাশা থেকে এ ধরনের অবস্থান নিয়েছে। তবে এতে বিএনপির উদ্দেশ্য কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাংলাদেশে ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী ঢাকার (Dhaka)এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “বিএনপি যে নতুন কর্মসূচি শুরু করেছে, ভারতের পণ্য বর্জন। এরকম মালদ্বীপে (Maldives) হয়েছিল। সেটি ছিল ‘ইন্ডিয়া আউট’ (ভারত খেদাও) কর্মসূচি। আমার মনে হয়, ওটারই একটা প্রভাব এখানে দেখতে পাচ্ছি। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির মধ্যে না আনাই ভালো।”

[আরও পড়ুন: পাতানো নাতনির সঙ্গে বেলঘরিয়ায় বাস, নিউটাউনে প্রৌঢ় ‘খুনে’ স্ক্যানারে সেই তরুণী]

বিএনপি নেতারা ভারতীয় পণ্য বর্জন কর্মসূচিতে সমর্থন দেওয়ার যুক্তি হিসেবে তাঁদের ভাষায় বাংলাদেশের জন-আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানের কথা বলেছেন। বাংলাদেশে ভারতের প্রাক্তন হাইকমিশনার বীণা সিক্রির বক্তব্য, ‘‘বাংলাদেশে কে ক্ষমতায় আসবে না আসবে, তা বাংলাদেশের জনগণের বিষয়। ভারত কখনও বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি। কারণ নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’ বীণা সিক্রি আরও বলেন, ‘‘আমি জানি না কীভাবে একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে পরে আবার ভারতকে দোষারোপ করতে পারে?” যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘বাংলাদেশ, ভারত পারস্পরিক নির্ভরতা আছে। ভারতে বাংলাদেশের প্রাক্তন হাইকমিশনার তারিক এ করিমের বক্তব্য, ‘‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ থেকেও ভারতীয় সেনারা ফিরে গেছে। প্রত্যেক রাষ্ট্রই তাদের অগ্রাধিকারকে প্রাধান্য দেয়। নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নয়, বরং সম্পৃক্ত থাকা উচিত।’’

প্রসঙ্গত, গত বুধবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর জনসমক্ষে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। এদিকে শুক্রবার শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ”গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতের অবস্থান জন-আকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে ছিল বলে ভারতীয় পণ্য বর্জন কর্মসূচি হচ্ছে।” ডানপন্থী ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা তাঁদের ভাষায় ভারতীয় আগ্রাসন ও ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুখপাত্র-১২ দলীয় জোট, সৈয়দ এহসানুল হুদা, সমন্বয়ক-১২ দলীয় জোট, আহসান হাবিব লিঙ্কন, মহাসচিব-জাতীয় পার্টি, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম-মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, রাশেদ প্রধান-সিনিয়র সহ-সভাপতি, জাগপা, ফারুক রহমান-চেয়ারম্যান, লেবার পার্টি ও সামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।

[আরও পড়ুন: লাল ট্রলিব্যাগ চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত! চেন খুলতেই বেরিয়ে এল দেহ]

এসব নিয়েই শাসকদলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ”বিএনপি আবারও পাকিস্তানি কায়দায় ইস্যু না পেয়ে ভারত বিরোধিতা শুরু করেছে। জনগণ ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করেছে। তার পরও বলে, ভারত নির্বাচিত করেছে আমাদের। ভারত নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement