ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বোলপুরের বাড়িতে গিয়ে অনুব্রতর চিকিৎসা নিয়ে বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর। বিতর্কের পর প্রথমবার ক্যামেরার সামনে কার্যত অস্বস্তিতে হাসপাতাল সুপার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি তিনি। ক্যামেরা দেখে কার্যত দৌড়ে উঠে পড়েন গণদেবতা এক্সপ্রেসে।
সোমবার গণদেবতা এক্সপ্রেসে চড়ে হাওড়া থেকে বোলপুর স্টেশনে পৌঁছন তিনি। সেই সময় সাংবাদিকরা কার্যত ঘিরে ধরেন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারকে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী জানিয়েছেন আপনার নির্দেশেই তিনি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কী বলবেন পুরো বিষয়টি নিয়ে? সত্যিই আপনার নির্দেশে চন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন? সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করতে বলেছিলেন? অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে আপনার কী সম্পর্ক? কোনও প্রশ্নের জবাবই দিতে চাননি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। ফের উলটো পথে হেঁটে স্টেশনে ঢুকতে শুরু করেন। মুখে বলতে থাকেন, “এখানে কোনও কমেন্ট করা যায় নাকি?” কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলা হয় তাঁকে। তবে না দাঁড়িয়ে দৌড়ে গিয়ে ভিড়ে ঠাসা গণদেবতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়েন হাসপাতাল সুপার। তবে শেষমেশ কোথায় গেলেন তিনি, সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।
[আরও পড়ুন: প্রোমোটিং বিবাদে নারকেলডাঙায় অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি, গুরুতর অসুস্থ বধূ]
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট এসএসকেএম হাসপাতালে নিজের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। সেই সময় ক্রনিক রোগ ছাড়া অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা ধরা পড়েনি তাঁর। এরপর সোজা চিনার পার্ক হয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে চলে যান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। পরেরদিনই তাঁর বাড়িতে যেতে দেখা যায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে। তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে বেড রেস্টের কথাও সাদা কাগজে লিখে দেন। তবে তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। এরপরই বিস্ফোরক দাবি করেন চন্দ্রনাথ। তিনি বলেন, হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মুর্মুর নির্দেশেই তিনি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়েছিলেন। এবং তাঁর কথামতোই সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করেছেন বলেও দাবি করেন।
তারপর বোমা ফাটান খোদ হাসপাতাল সুপার। তিনি দাবি করেন, সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর নির্দেশেই অনুব্রতর বাড়িতে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসককে পাঠিয়েছিলেন। চিকিৎসককে নির্দেশ দেননি বলেও দাবি করেন তিনি। এই টানাপোড়েনের পর সোমবার প্রথমবার ক্যামেরার সামনে কার্যত ‘নীরব’ই থাকলেন হাসপাতাল সুপার।
দেখুন ভিডিও: