সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রাজিলের (Brazil) কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টে তাণ্ডব চালাল প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান জাইর বলসোনারোর (Jair Bolsonaro) সমর্থকরা। রবিবার বিকেলে ব্রাজিলের পতাকা হাতে নিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলিতে হামলা শুরু করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা। দরজা-জানলা ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট ও দেশের কংগ্রেস ভবনে ঢুকে সামরিক অভ্যুত্থানের দাবি জানায় উন্মত্ত জনতা। এই তাণ্ডবকে ফ্যাসিবাদী হামলার আখ্যা দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা (Lula Da Silva)। ব্রাজিলের এহেন ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে মার্কিন ক্যাপিটলের হামলার ঘটনা। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি একইভাবে মার্কিন সংসদে হামলা চালিয়েছিল সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা।
জানা গিয়েছে, রবিবার ব্রাজিলের স্থানীয় সময় দুপুর তিনটে নাগাদ বলসোনারোর বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো হন দেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি ভবনের সামনে। প্রেসিডেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ও দেশের কংগ্রেস- তিনটি জায়গায় একসঙ্গে তাণ্ডব শুরু করে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের সমর্থকরা। হামলার একাধিক ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, তিনটি ভবনে ঢুকে ভাঙচুর করেছে উন্মত্ত জনতা। তাছাড়াও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরি করেছে হামলাকারীরা। নানা জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলা থামাতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছে পুলিশ। হেনস্তা করা হয়েছে সাংবাদিকদেরও।
[আরও পড়ুন: চরবৃত্তির নয়া ছক, প্যালেস্টাইন সীমান্তে গরু পাঠাচ্ছে ইজরায়েল!]
যদিও এই ঘটনার সময়ে রাজধানীতে উপস্থিত ছিলেন না প্রেসিডেন্ট লুলা। হামলার খবর পেয়েই তিনি সরাসরি বলসোনারোকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন। হামলা থামাতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে সাফ জানিয়ে দেন, হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক জনকে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবনের সামনে নিরাপত্তা বলয় গড়ে জনতাকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। অন্য দু’টি জায়গা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়। ইতিমধ্যেই হামলায় জড়িত থাকার কারণে ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে এই হামলায় নিজের ভূমিকা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ব্রাজিলের অতি দক্ষিণপন্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। হামলার পরে টুইট করে তিনি এই তাণ্ডবের কড়া নিন্দা করেছেন। তবে সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার রয়েছে দেশের মানুষের। প্রসঙ্গত, নির্বাচনে হারের থেকেই গোটা ভোট প্রক্রিয়াতে কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন বলসোনারো। এমনকি প্রথা ভেঙে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। ব্রাজিলে হামলার কড়া নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। গণতন্ত্রের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করে ব্রাজিলের মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস-সহ একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এই হামলার নিন্দা করেছেন।