সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হবেই। ক্ষমতা থাকলে রুখে দেখান। মতুয়াদের গড় ঠাকুরনগরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, CAA বিরোধী এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করে ছাড়ব।
ঠাকুরনগরের সভায় দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেছেন,”CAA বিরোধিতার নামে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, হেনস্তা করা হচ্ছে।” এরপরই তাঁর চ্যালেঞ্জ, “বাংলায় CAA হবেই। এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখান। আমরা বহুবার CAA’র দাবি করেছি, এটা বহুল চর্চিত বিষয়।” নাগরিকত্ব নিয়ে শুভেন্দুর আশ্বাস, “প্রধানমন্ত্রী ভেদাভেদ করেন না। কারও নাগরিকত্ব কাড়া হবে না। এটা নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়। এটা সমনাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।”
[আরও পড়ুন: সৌজন্য অতীত! ‘মমতাকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করবই’, চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর]
মতুয়া গড় থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, “সিএএ বিরোধী নেত্রীকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার জন্যই এই সভা। CAA বিরোধী এই মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা প্রাক্তন করে ছাড়ব।” শুভেন্দু একা নন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার চাইলেও CAA আটকাতে পারবে না। তাঁর বক্তব্য, সংসদে বিল পাশ হয়েছে। সেই বিলে রাষ্ট্রপতি সই করে আইনে পরিনত করেছেন। সেটা কার্যকর হবেই। মুখ্যমন্ত্রী আটকাতে পারবেন না।
[আরও পড়ুন: শান্তিকুঞ্জে ‘চায়ে পে চর্চা’? শুভেন্দুর বাড়িতে চায়ের আমন্ত্রণ অভিষেকের]
আসলে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মতুয়াদের সমর্থন আদায়ে সমর্থ হয়েছিল বিজেপি। ২০২১ সালেও সেই মতুয়াদের গড়ে বিজেপি নিজেদের শক্তি ধরে রাখে। কিন্তু আইন পাশ হওয়ার এতদিন বাদেও CAA কার্যকর না হওয়ায় বিজেপির কোর ভোট ব্যাংক মতুয়াদের মধ্যেও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে আবার আসরে নেমেছে তৃণমূলও। দিন কয়েক আগে নদিয়ার এক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর জীবন থাকতে রাজ্যের কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে পারবে না বিজেপি। CAA’র মতো বিভেদকামী আইনও তিনি কার্যকর হতে দেবেন না। মমতার অভিযোগ ছিল, CAA আসলে বিজেপির ধাপ্পা। রাজ্যের মতুয়ারা আগে থেকেই নাগরিক হওয়ার সবরকম সুবিধা পাচ্ছেন। সুতরাং আলাদা করে নাগরিকত্বের জন্য আর কোনও আইন পাশ করানোর দরকার নেই।
বিজেপির আশঙ্কা রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো মতুয়া গড়েও তাঁদের ভোটব্যাংক ধীরে ধীরে তৃণমূলের দখলে চলে যেতে পারে। সম্ভবত সেই আশঙ্কা থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে আগে CAA প্রসঙ্গ উসকে দিয়েছেন তিনি। তৃণমূল অবশ্য আগের অবস্থানেই অনড়। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাফ বলে দিচ্ছেন, যে ভোটারদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তাদেরই আবার নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছেন, এসব পাগলের প্রলাপ।