সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল্পনার অবসান। প্রধানমন্ত্রী মোদির বাসভবনে হওয়া ক্যাবিনেট বৈঠকে ঠিক হয়ে গেল কে কোন মন্ত্রকের দায়িত্বে। বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় জেডিইউ, টিডিপির মতো আঞ্চলিক শরিকদের সমর্থনে কেন্দ্রে সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে বলে আগামী ৫ বছর তাদের নানা বায়নাক্কা মানতে বাধ্য থাকবেন নরেন্দ্র মোদি, এমনটা মনে করছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। নীতীশকুমার, চন্দ্রবাবু নাইডুদের হাতেই মোদি সরকারের রিমোট কন্ট্রোল থাকবে বলে তাঁরা মনে করছিলেন। কিন্তু সরকারের 'প্রাণভোমরা' হয়ে ওঠার বদলে শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক রাজনীতির দুই মাথা কি তবে উলটে নিজেরাই বাধ্য শরিক হয়ে গেলেন? সোমবারের প্রাপ্ত হিসেব সেদিকেই যেন ইঙ্গিত করছে।
স্বাভাবিক ভাবেই সোমসন্ধ্যায় মোদি মন্ত্রিসভার (Modi Cabinet) প্রথম বৈঠকে দপ্তর বন্টন হয়ে যাওয়ার পর এই প্রশ্নটাই যেন চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠছে। কেননা স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, বিদেশ, রেল--সরকারের চারটি সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের মাথায় কোনও বদলই হল না, যেমনটি ভাবা হচ্ছিল। স্বরাষ্ট্রে অমিত শাহ, প্রতিরক্ষায় রাজনাথ সিং, অর্থ নির্মলা সীতারামন, রেলে অশ্বিনী বৈষ্ণব, বিদেশে এস জয়শংকর- চারজনকেই দায়িত্বে বহাল রাখলেন মোদি (PM Modi)।
[আরও পড়ুন: ক্যানসারে আক্রান্ত মিঠু, চলছে কেমো, স্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন ‘ফেলুদা’ সব্যসাচী]
অথচ ভোটের ফলে গেরুয়া দলের আসন সংখ্যা তাদের প্রত্যাশা ও দাবির তুলনায় অনেক কম থাকায় এক সপ্তাহ ধরে শোনা যাচ্ছিল, শরিকরা সমর্থনের বিনিময়ে বেশ কিছু শাঁসালো দপ্তর চেয়ে মোদির ওপর এমন প্রবল চাপ দেবে যে, তিনি সরকার টিকিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতায় নীতীশ, চন্দ্রবাবুর দাবির কাছে মাথা নোয়াবেন।
এমনকী গতকাল শপথ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ভাষণে 'এটা এনডিএ সরকার' বলে উল্লেখ করায়, জোট শরিকদের এই প্রথম গুরুত্ব, মর্যাদা দিয়ে চলার ইঙ্গিতও দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, দপ্তর বন্টনে নিজেদের কর্তৃত্ব বহাল রেখে মোদি বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তিনি চলবেন তাঁর মতোই। এর পিছনে কী কারণ, তা নিয়ে চলছে জল্পনা।
[আরও পড়ুন: ফের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ, রেল পেলেন না নীতীশ! নতুন সরকারে কোন পদে কে?]
আসলে নীতীশ-নায়ডুর মাথায় ঝুলছে দুর্নীতির অভিযোগের খাঁড়া। বেআইনি মদ কারবারিদের থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এদিকে ৩৭১ কোটির স্কিল ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি জমির বিনিময়ে দুর্নীতির অভিযোগের মামলা রয়েছে চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধেও। টিডিপি নেতাকে তো জেলও খাটতে হয়েছে। পুরনো এই সব দুর্নীতির ফাইল খোলা হতে পারে, এই চাপেই কি গেরুয়া শিবির বশ করে রাখতে পারল তাঁদের? আলোচনা শুরু হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ একমত, শেষপর্যন্ত নিজেদের হাতেই 'বিগ ৪'-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক হাতে রেখে বিজেপি বার্তা দিয়ে রাখল শরিকদের।