গোবিন্দ রায়: মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্লাড ক্যানসার আক্রান্ত রাজ্যের নবম-দশম শ্রেণির সহকারি শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থী সোমা দাসের চিকিৎসার ভার নিতে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে সোমাকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ করা যায় কি না, তা নিয়েও রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দপ্তরের সচিবকে বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সোমবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতির অনুরোধ, আবেদনকারীর চিকিৎসার জন্য বিপুল খরচ হচ্ছে। শিক্ষা দপ্তর যেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে। অন্তত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁকে চাকরি দেওয়া যায় কি না তা দেখুক শিক্ষা দপ্তর। এদিকে দায়ের হওয়া স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে সোমা দাস জানান, “২০১৯ সালের ২৮ মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে যখন ধরনা চলছিল, তখন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে স্বয়ং এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আন্দোলনকারীদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। আন্দোলনকারীদের থেকে ৫ জন প্রতিনিধি নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছিল।”
[আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ‘কলার ধরা’র হুমকির অডিও ভাইরাল, অভিযুক্ত TMCP]
অভিযোগ, হাফিজুল গাজি, ইনসান আলি, তানিয়া শেঠ, রাকেশ প্রামাণিক, অর্পিতা পারভিন-এই ৫ জন আন্দোলনকারী সরকার পক্ষের ৫ জনের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে দেখা যায়, এই ৫ জন এবং তাদের বেশ কয়েকজন পরিজন চাকরি পেয়েছেন। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, অলোক কুমার সরকার, তাপস পাঁজা, সুকান্ত আচার্য, এবং পি কে বন্দোপাধ্যায়-সহ ৫ জনের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
এর প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, এসএসসির চাকরিতে যে বেনিয়মের যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত, তা খতিয়ে দেখে শিক্ষাসচিব এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ মে। উল্লেখ্য, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সোমা দাসের খবর সংবাদমাধ্যমে দেখে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আদালত তাঁকে অন্য চাকরিরও প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে সোমা জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও মানবিকতা চান না। লড়াই করতে চান। শিক্ষকের চাকরি করেই তিনি অন্য সকলের হয়ে প্রতিবাদ জারি রাখতে চান। তার প্রেক্ষিতেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে।