অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের দিশা দেখাচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-১ ব্লকে থাকা আইটিআই (ITI) কলেজ। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে ‘ড্রেস মেকিং ট্রেড’-এর একটি প্রোডাকশন ইউনিট খুব শীঘ্রই চালু হবে বলে সূত্রের খবর। এখান থেকে উৎপাদিত পোশাক বিভিন্ন সংস্থার চাহিদামতো সরবরাহ করা হবে। আর তাতেই বিপুল আয়ের আশা দেখছেন সকলে। এই আইটিআই কলেজ থেকে পাশ করা প্রশিক্ষিতরাই কাজের সুযোগ পাবেন বলে জানানো হয়েছে। করোনা আবহে যখন অনেকেই কাজ হারাচ্ছেন, ঠিক তখনই বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ করিয়ে দিয়ে কর্মপ্রার্থীদের অর্থোপার্জনের পথ দেখাচ্ছে এই কলেজ।
এই সরকার আসার পরেই এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণীসম্পদ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগে পূর্বস্থলী-১ (Purbasthali) ব্লকের বিদ্যানগরে এই আইটিআই কলেজটি তৈরি হয় ২০১৬ সালে। বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই ছিল কলেজ স্থাপনের মূল লক্ষ্য। এই কলেজ রাজ্যের কারিগরি দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ওই দপ্তরও সদর্থকভাবে এগিয়ে আসায় যুবক-যুবতীদের স্বপ্নপূরণে তা অনেকটাই সহজ হয়।
[আরও পডুন: HS পাশেই Kolkata Municipal Corporation-এ মিলতে পারে চাকরির সুযোগ, জেনে নিন শর্ত]
অটোমোবাইল, ফিটার, ইলেকট্রিশিয়ান, কম্পিউটার, প্লাম্বিং, ড্রেস মেকিং, সার্ভেয়ারের মত ১০টি বিষয়ে প্রশিক্ষিতদের শুধু প্রশিক্ষণই দেওয়া হয় না, ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগও করে দেওয়া হয়। এখানে বর্তমানে সবমিলিয়ে ৬৭২ টি আসন রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ৫৫০ জন স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন। এখানে প্রশিক্ষণরতদের সুবিধার জন্য আধুনিকমানের যন্ত্রপাতিও রয়েছে। এই কারণে বর্তমানে এই কলেজের সুনামও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। গুনগত মানের নিরিখে এই কলেজ দেশের অন্যান্য আইটিআইয়ের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে, জানান আইটিআইয়ের প্রিন্সিপাল তনুময় বৈরাগ্য। তিনি আরও জানান, ”খুব শীঘ্রই ড্রেস মেকিং ট্রেডের কাজ অর্থাৎ পোশাক তৈরির জন্য একটি প্রোডাকশন ইউনিট তৈরি হতে চলেছে। সেই বিষয়ে অনেকটা কাজ এগিয়ে গিয়েছে।”
[আরও পডুন: Nursing Training নেওয়া থাকলেই রয়েছে চাকরির সুযোগ, জেনে নিন খুঁটিনাটি]
পোশাক বানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক মেশিন বসাতে হবে কলেজে। তার জন্য জায়গাও ঠিক হয়ে গিয়েছে কলেজের ভিতরেই। খুব শীঘ্রই মেশিনগুলি এসে পৌঁছবে। যেখানে বিভিন্ন স্কুল ও সংস্থার ইউনিফর্ম তৈরি করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার চাহিদামতো তা তৈরি করে জোগান দেওয়া হবে। ড্রেস মেকিংয়ের প্রশিক্ষক মনীষা বিশ্বাস বলেন,“এখান থেকে প্রশিক্ষিতরাই এখানকার প্রোডাকশন ইউনিটে কাজ করার সুযোগ পাবেন। কাজের বিনিময়ে তাঁরা মজুরিও পাবেন। স্বাভাবিক কারণেই প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের এখানে ওখানে গিয়ে আর কাজ খুঁজতে হবে না। স্বাভাবিক কারণেই এই খবরে খুশির হাওয়া বইছে প্রশিক্ষিত ও অভিভাবকমহলে।”
যদিও এর আগে এখানকার প্রশিক্ষিত ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই রেল দপ্তর-সহ অন্যান্য দপ্তরে চাকরি পেয়েছেন বলে জানা যায়। প্রিন্সিপাল তনুময় বৈরাগ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উৎকর্ষ বাংলা’য় স্কিলড ডেভলপমেন্ট প্রোজেক্টটি পৃথিবীর মধ্যে সেরা হিসাবে বিবেচিত হয়। সেটিও ২০১৬ সাল থেকে এখানে চালু রয়েছে।” মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,“এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে পাশ করা ছেলেমেয়েরা এখানেই কাজের সুযোগ পাবেন। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছে এই কলেজ। কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই অনেক পরিবারের পক্ষে তা ভীষণ ভাল হবে।”