সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় সন্ত্রাস বিরোধী নীতি নিয়ে আসতে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, 'নয়া এই নীতিতে সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। তবে তথ্য দেওয়া থেকে শুরু করে ব্যবস্থা নেওয়া পর্যন্ত সবেতেই কেন্দ্রীয় সংস্থাই সহায়তা করবে।' তবে কেন্দ্রের এই নয়া নীতিতে রাজ্যগুলির আশঙ্কা, এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে কেন্দ্রের হাতে।
দিল্লিতে দু’দিনব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী সম্মেলন, ২০২৪-এর উদ্বোধনী ভাষণে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন শাহ। সন্ত্রাসবাদী হামলা যে বেড়ে চলেছে তা উল্লেখ করে কীভাবে তার মোকাবিলা করা হবে সেই রাস্তাও দেখিয়েছেন। এই সম্মেলন থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং খুব শীঘ্রই একটি জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী নীতিও নিয়ে আসা হবে। আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা এবং ষড়যন্ত্র, সীমান্ত নির্বিশেষে অদৃশ্যভাবে চলছে। সন্ত্রাসীদের বয়স আগের চেয়ে কমেছে। এর বিরুদ্ধে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হলে আমাদের তরুণ অফিসারদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে সজ্জিত করতে হবে, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমরা আগামী দিনে এটিকে প্রশিক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে তুলব।”
এর পাশাপাশি নয়া নীতিতে রাজ্যের ভুমিকা কতটুকু থাকবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা না দিলেও শাহ জানান, "কোনও রাজ্যে যদি সন্ত্রাসবাদী হামলা ঘটে তবে তার মোকাবিলা করবে রাজ্য পুলিশ। বে তথ্য দেওয়া থেকে শুরু করে ব্যবস্থা নেওয়া পর্যন্ত সবেতেই কেন্দ্রীয় সংস্থাই সহায়তা করবে।" এখানেই উঠছে আপত্তি। রাজ্যগুলি মনে করছে, এর মাধ্যমে আসলে কেন্দ্র চাইছে সন্ত্রাস বিরোধিতায় রাজ্যের ক্ষমতাকে ছেঁটে ফেলে পুরো রাশ নিজের হাতে নিয়ে নিতে। রাজ্য পুলিশকে ব্যবহার করা হবে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের কোনও ভুমিকা থাকবে না। কেন্দ্রের নির্দেশেই পরিচালিত হবে সবটা। এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী হিসেবে দেখছে অবিজেপি রাজ্যগুলি।
উল্লেখ্য, এর আগে কংগ্রেস সরকারের আমলে এমনই নীতি চালুর চেষ্টা করেছিল মনমোহন সিংয়ের সরকার। তৎকালিন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এই প্রস্তাব পেশ করলে তীব্র বিরোধিতা করে বিরোধীরা। বহুবার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত এই নীতি লাগু করতে পারেনি ইউপিএ সরকার। এবার সেই নীতিই লাগু করার পথে হাঁটতে চলেছে মোদি সরকার। স্বরাষ্টমন্ত্রীর দাবি, এই নীতি ভারতের নিরাপত্তা পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে সাহায্য করবে।