তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: এবারে ‘স্কলারশিপ জালিয়াতি’র ছায়া উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে (North Bengal University)। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে ১৫ জন ভূতুড়ে পড়ুয়ার সন্ধান মিলল। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ওই পনেরো জনের নাম পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপের (Scholarship) টাকা প্রাপকদের তালিকায় রয়েছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই বছর ওই পড়ুয়াদের কোনও অস্তিত্বও নেই।
শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া নয়, তাদের অন্তর্গত আরও একটি শিলিগুড়ির সেলেসিয়ান কলেজের ছয় স্নাতক স্তরের ভূতুড়ে পড়ুয়াদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারে যাঁরা কখনওই ছিলেন না। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর অন্তর্তদন্তে ভূতুড়ে পড়ুয়াদের নাম দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও তাঁদের দাবি, স্কলারশিপ প্রদানকারী সংস্থার টাকা প্রদানের আগে সংশ্লিষ্ট স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নথিপত্র যাচাই করার কাজে আরও বেশি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
[আরও পড়ুন: পরকীয়ায় মজে স্বামী, হাতেনাতে ধরে বেল্ট দিয়ে বর ও প্রেমিকাকে মার স্ত্রীর]
ঠিক কী ঘটেছে? কেন্দ্রীয় স্কলারশিপ পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের ওই পনেরো জনের নাম ৩৯০০ টাকা থেকে ৭০০৮ টাকা পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ ফর মাইনরিটি স্কলারশিপ স্কিমের টাকা পাওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে একই শিক্ষাবর্ষে সেলেসিয়ান কলেজের ছয়জনের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬০০০ টাকা করে জমা পড়েছে। যদিও তারা কোনদিনও সংশ্লিষ্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি।
এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, “আপনাদের থেকে বিষয়টি জানলাম। তবে আমাদের মনে হয় স্কলারশিপ প্রদানকারীদের নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো উচিৎ।” বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অফ একজামিনেশন দেবাশিস দত্ত বলেন, “২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে সেলেসিয়ান কলেজ বা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বিষয়ে ওই পড়ুয়াদের অস্তিত্বই ছিল না।”
[আরও পড়ুন: নৃশংস! বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ, মহিলাকে নেড়া করে কালি মাখিয়ে ‘শাস্তি’ প্রতিবেশীদের]
এই বিষয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “এইভাবে একের পর এক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জালিয়াতি চক্রের অবাধ প্রবেশ দেখে আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি। আমি ইতিমধ্যেই আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জনস্বার্থ মামলার পথে এগোচ্ছি।” এই বিষয়ে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন, “এভাবে একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঁড়িয়ে যে বা যারা এমন কাজ করছে তাদের ধরতে অবশ্যই পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া উচিৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। প্রতিষ্ঠানের ভিতরের কেউ এর সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তাও খোঁজ নিতে হবে।”