চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান ৩-এর (Mission Chandrayaan-3) সফল ল্যান্ডিংয়ের জন্য প্রার্থনা শুরু হয়ে গিয়েছে। মিশন নিয়ে বিশ্লেষণে আরামবাগের নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. বিনয় মালাকার।
আগামিকাল অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে দুপুর ২.৩৫ মিনিটে চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণ করবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। সব ঠিকঠাক থাকলে চন্দ্রযান ৩ চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে ২৩ আগস্ট।
এর আগে ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি উৎক্ষেপণ হয় চন্দ্রযান ২। তবে উৎক্ষেপিত চন্দ্রযান ২-এর অরবিটরটি সফলভাবে চন্দ্রকক্ষে প্রবেশ করলেও অবতরণের ঠিক আগের মুহূর্তে ল্যান্ডারটি চাঁদের (Moon) মাটিতে ভেঙে পড়ে এবং ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই চন্দ্রযান ৩ মিশনে আর কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি চায় না ইসরো।
[আরও পড়ুন: শুক্রে মাহেন্দ্রক্ষণ, সফল চন্দ্রযান ৩ মিশনের মহড়া, তিরুপতিতে পুজো ইসরোর বিজ্ঞানীদের]
চাঁদের মাটিতে কী কাজ করবে চন্দ্রযান ৩?
চন্দ্রযান ৩-এ তিনটি মডিউল থাকছে। ১) প্রোপালশান ২) ল্যান্ডার ৩) রোভার। অরবিটার থাকছে না। প্রোপালশান মডিউল মূলত একটি রকেট যা চন্দ্রযান ৩-কে উৎক্ষেপন করতে সাহায্য করবে। ল্যান্ডারের কাজ হল চাঁদের কক্ষপথ থেকে রোভারকে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামিয়ে আনা। রোভার একটি ছয় চাকা যুক্ত রোবটযান যেটি চন্দ্রপৃষ্ঠে হেঁটে বেড়াবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য ও ছবি পৃথিবীতে পাঠাবে।
চন্দ্রযান ২-এ যে ভুল হয়েছিল, সেই ভুল যাতে আর না হয় সেদিকে এবার বাড়তি নজর রাখছে ইসরো। তৃতীয় এই চন্দ্রাভিযান আরও অনেক বেশি শক্তিশালী। চন্দ্রযান ২-এ শুধু অটো প্রোগ্রামিং ল্যান্ডিং সফট ওয়ারই ছিল। ছিল না কোনও ম্যানুয়াল কন্ট্রোল সিস্টেম। চন্দ্রযান ৩-এ বিজ্ঞানীদের হাতে ল্যান্ডিংয়ের নিয়ন্ত্রণ থাকছে। যদিও রোভার প্রজ্ঞান একই রকম থাকছে।
[আরও পড়ুন: খুচরো বাজারে হাতে ছ্যাঁকা, ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি]
চাঁদের দক্ষিণ মেরু এখনও মানুষের কাছে অনেকটাই অজানা। এই চিরছায়াচ্ছন্ন অঞ্চলে জলের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। এই মেরুর গর্তেই রয়েছে অনেক গহ্বর যা সৌরমন্ডলের প্রাচীনতম জীবাশ্ম। এখনও পর্যন্ত যতগুলি চন্দ্রাভিযান হয়েছে তার বেশিরভাগই চাঁদের উত্তর মেরুতে হয়েছে। অর্থাৎ চাঁদের দক্ষিণ মেরু প্রায় অনাবিষ্কৃতই থেকে গিয়েছে। চাঁদের যে অংশে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম নামার চেষ্টা করেছিল, সেখানেই অবতরণ করানো হবে চন্দ্রযান ৩-কে। এবারের যাত্রা সফল হলে চাঁদের বুকে অবতরণ করতে পারা চতুর্থ দেশ হবে ভারত (আমেরিকা,রাশিয়া ও চিনের পরে)।