সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নকল কখনও আসলকে টেক্কা দিতে পারে না। এমনটাই বলেন সকলে। কিন্তু সব সময়ই কি তা হয়? অন্তত চিনের ‘কৃত্রিম সূর্য’ সেই ধারণাকে যে চুরমার করে দিয়েছে তা বলাই যায়। সূর্যের (Sun) কেন্দ্রের উষ্ণতা যেখানে দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে চিনের (China) এই ‘কৃত্রিম সূর্য’ (Artificial Sun) উৎপন্ন করতে পেরেছে ১২ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস! অর্থাৎ সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রার ৮ গুণ! তবে তা ১০১ সেকেন্ডের জন্য। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এই সাফল্য চমকে দিয়েছে সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের।
কেবল ওই তাপমাত্রাই নয়, তাকেও টপকে গিয়েছে পৃথিবীর বুকে অবস্থানকারী এই সূর্য। তবে তা আরও অল্প সময়ের জন্য। মাত্র ২০ সেকেন্ডের জন্য ১৬ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়েছে এই নকল সূর্য। আপাতত তাই আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য এই ধরনের তাপমাত্রা উৎপন্ন করাই লক্ষ্য বিজ্ঞানীদের।
[আরও পড়ুন: ‘মেঘের খেলা আকাশ পারে’, মঙ্গলের মেঘলা দিনের অসামান্য ছবি শেয়ার করল নাসা]
সূর্যের অভ্যন্তরে লাগাতার নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়ায় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম উৎপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়াতেই উৎপন্ন হয় ওই বিপুল তাপশক্তি। সেই পদ্ধতিকেই কাজে লাগিয়েই বাজিমাত চিনের ‘এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপারকনডাক্টিং টোকাম্যাক’ তথা EAST ফিউশন রিঅ্যাক্টরের। চিনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ এই পরীক্ষাকে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ বলে জানিয়ে আগামী দিনে আরও সাফল্যের আশা ব্যক্ত করেছে।
তবে এই রিঅ্যাক্টরের কাজকর্ম এখনও পরীক্ষা নিরীক্ষার স্তরেই রয়েছে। বিজ্ঞানীদের আশা, আর এক দশকের মধ্যেই এটি নিজের পূর্ণ ক্ষমতা দেখাতে পারবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছেন প্রায় ৩০০ জন বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ার।
কিন্তু এত বেশি তাপমাত্রা উৎপন্ন করে কোন লক্ষ্যমাত্রায় পৌছতে চাইছে এই ‘কৃত্রিম সূর্য’? আসলে এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্যই নিরবিচ্ছিন্ন শক্তিপ্রবাহ তৈরি করা। সমুদ্র থেকে পাওয়া ডয়টেরিয়ামের সাহায্যে সূর্যের মতোই নিউক্লিয়ার ফিউশন ঘটিয়েই সেই প্রবাহ তৈরি করতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। তবে কেবল চিনই যে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে তাক লাগাচ্ছে তা নয়। এবিষয়ে চিনকে জোর টক্কর দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাদের তৈরি ‘সুপার কনডাক্টিং টোকাম্যাক অ্যাডভান্সড রিসার্চ ফিউশন ডিভাইস’ ১০ কোটি ডিগ্রি তাপমাত্রা উৎপন্ন করেছিল। তবে ২০ সেকেন্ডের জন্য।