সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উইঘুর মুসলিমদের প্রতি চিনা প্রশাসনের নীতি বিশ্বের অজানা নয়। ‘শুদ্ধিকরণের’ নামে জিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুরকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ বা বন্দি শিবিরে রাখা হয়েছে। এবার কর্মসংস্থানের নামে তাঁদের দিয়ে রীতিমতো বেগার খাটাচ্ছে প্রশাসন। আর গোটা পরিস্থিতি জেনেও মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে মুসলিম দেশগুলি।
সদ্য একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এক ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ নিয়ে বিবৃতি দেন জিনজিয়াং প্রদেশের প্রশাসনিক প্রধান শহরাত জাকির। তিনি বলেন, “ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের থাকা সব শিক্ষানবীশই পরীক্ষায় উতরে গিয়েছেন। সরকারের মদতে তাঁদের কর্মসংস্থান করা হয়েছে। এর ফলে তাঁদের জীবনযাপনের মান উন্নত হয়েছে।” তবে বিশ্লেষক ও মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের দাবি, গোটা প্রক্রিয়াটি আসলে একটা বড়ো ধাপ্পাবাজি। কর্মসংস্থানের নামে উইঘুর মুসলিমদের বিভিন্ন কারখানায় বেগার খাটতে বাধ্য করছে প্রশাসন। এর মধ্যে প্রায় সবকটি ফ্যাক্টরির পরিবেশই বন্দি শিবিরগুলির থেকে ভিন্ন কিছু নয়। ফলে নাৎসি জার্মানির মতোই সংখ্যালঘুদের দাসত্বের শিকলে বেঁধে ফেলছে চিন। উদ্বেগজনকভাবে, আন্তর্জাতিক নজর এড়াতে গোটা প্রক্রিয়াটিকেই শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মোড়কে মুড়ে ফেলেছে কম্যুনিস্ট দেশটি।
[আরও পড়ুন: রক্তে রাঙানো ‘রুম নম্বর ২২৭’, পাক সেনার অত্যাচারের বর্ণনা বৃদ্ধ লিয়াকতের]
উইঘুরদের উপর চলা নিপীড়নের বিরুদ্ধে কাজ করছে ‘ভিক্টিমস অফ কমিউনিজম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থা। সেখানেই কর্মরত গবেষক এড্রিয়ান জেনজ দাবি করেছেন, ২০১৮ সালের শেষের দিক থেকেই বন্দি শিবিরগুলি থেকে উইঘুরদের বিভিন্ন কারখানা মজুর হিসেবে কাজ করার জন্য পাঠানো হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে রীতিমতো কড়া নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ রাখা শুরু করেছে প্রশাসন। কমিউনিজমের পাঠ দেওয়ার নামে উইঘুর সংস্কৃতি ও ধর্মকে মুছে ফেলতে চাইছে লালচিন। এদিকে, গোটা বিষয়টি জানতে পেরেও চুপ করে আছে পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইরানের মতো মুসলিম দেশগুলি। চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও চিনা লগ্নির জন্যই মুসলিম বিশ্বের এই অবস্থান বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সব মিলিয়ে উইঘুরদের হয়ে আওয়াজ তোলার জন্য সেই অর্থে কেউই এগিয়ে আসার সাহস দেখাচ্ছে না। ফলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হবে তা বলাই বাহুল্য।
The post মুসলমানদের বেগার খাটতে বাধ্য করছে চিন, চুপ ইসলামিক দেশগুলি appeared first on Sangbad Pratidin.