সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার প্রয়াত হয়েছেন বিজ্ঞাপন জগতের কিংবদন্তি পীযূষ পাণ্ডে। এদেশের বিজ্ঞাপন জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর তৈরি বহু বিজ্ঞাপন আজও দর্শকের মনে এক আলাদা জায়গা ধরে রেখেছে। তা ক্যাডবেরির 'কুছ খাস' হোক কিংবা ভোডাফোনের বিজ্ঞাপন, এসবকিছুই তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত।শুধু কি তাই? মোদি সরকারের বিজ্ঞাপন 'আব কি বার, মোদি সরকার'ও তাঁরই সৃষ্টি। এদিন তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে বিনোদুনিয়ার বহু ব্যক্তিত্ব পীযূষ পাণ্ডের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। বিজ্ঞাপন দুনিয়ার এই পথিকৃতের মৃত্যুতে এবার শোকপ্রকাশ করলেন অমিতাভ বচ্চন।
এদিন পীযূষ পাণ্ডের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে নিজের ব্লগে অমিতাভ লেখেন, 'একজন সৃষ্টিশীল মানুষ, একজন প্রকৃত বন্ধু, পথপ্রদর্শককে হারালাম। এই ক্ষতির ভাষা নেই কোনও। পীযূষ পাণ্ডে শুক্রবার সকালে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে। তবে শিল্পী চলে গেলেও রেখে গেলেন তাঁর সৃষ্টি। যা আমাদের কাছে অমূল্য হয়ে থাকবে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।' শুধু তাই নয়, নিজের এক্স হ্যান্ডলেও বন্ধুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন অমিতাভ। উল্লেখ্য, নয়ের দশকে পীযূষ পাণ্ডের সঙ্গে অনেক বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পোলিওর সেই বিজ্ঞাপন। দেশজুড়ে পোলিওর মতো রোগের সচেতনতা বাড়াতে অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠস্বরকেই বেছে নিয়েছিলেন পীযূষ পাণ্ডে। সেই বিজ্ঞাপনের 'দো বুঁদ জিন্দেগি কে' তার গলায় শুনে কমবেশি সকলেই তখন একটু একটু করে সজাগ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। হয়েছে অসাধ্যসাধন।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞাপন জগতের পথিকৃৎ পীযূষ পাণ্ডের জন্ম জয়পুরে। বিখ্যাত গায়িকা ইলা অরুণের ভাই তিনি। ১৯৮২ সালে বিজ্ঞাপন দুনিয়ায় পা রাখেন পীযূষ। ক্রিকেট থেকে টি টেস্টিং- নানা বিষয়ে আগ্রহ থাকলেও বিজ্ঞাপনই ছিল প্রথম ও প্রধান প্রেম। ক্যাডবেরির ‘কুছ খাস হ্যায়’, ‘এশিয়ান পেন্টস’-এর বিজ্ঞাপন ‘হর খুশি মে রং লায়ে’, ‘ফেভিকল’-এর একাধিক বিজ্ঞাপন কিংবা ভোডাফোনের (তখন নাম ছিল হাচ) পাগ কুকুরের বিজ্ঞাপনের মতো অসংখ্য ‘মিথ’ হয়ে যাওয়া বিজ্ঞাপনের স্রষ্টা পীযূষ। দূরদর্শনে ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা’র মতো দেশভক্তির গানের ভিডিও-তেও পীষূষের কণ্ঠ ব্যবহৃত হয়েছিল। এরই পাশাপাশি ওগিলভির চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার ওয়ার্ল্ডওয়াইড (২০১৯) এবং এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ইন্ডিয়া হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০২৪ সালে এলআইএ লেজেন্ড অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৬ সালে পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন পীযূষ।
