সুপর্ণা মজুমদার: মঙ্গলবারের জবর খবর। বাংলা সিনেমার বাংলা গান অস্কারের দৌড়ে। সারা বিশ্বের সেরা ৮৯ গানের মধ্যে ঠাঁই পেল ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পুতুল’ সিনেমার ‘ইতি মা’ গান। সায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের সুরে গানটি গেয়েছেন ইমন চক্রবর্তী। আর গানটি লিখেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। 'জোকার', 'লায়ন কিং'-এর মতো আন্তর্জাতিক সিনেমার গানের সঙ্গে পাল্লা দেবে তাঁর লেখা গান। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না অনির্বাণের। বিশেষ দিনে তাঁর কথায় উঠে এল বাণী কুমার ও চন্দ্রিল ভট্টাচার্যর নাম।
ছবি: ফেসবুক
কিন্তু কেন এই দুজনের নাম? কারণ এঁদের ঐতিহ্য বহন করছেন অনির্বাণ। যে বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য ওরফে বাণী কুমারের 'মহিষাসুরমর্দিনী' (রচনা ও প্রবর্তনা) ছাড়া বাঙালির মহালয়া শুরু হয় না, তাঁর নাতি অনির্বাণ। সম্পর্কে চন্দ্রিল ভট্টাচার্য তাঁর দাদা হন। অস্কারের তালিকায় যখন তাঁর লেখা গানের নথিভূক্ত হওয়ার কথা প্রথম জেনেছিলেন, তখন এই দুজনের কথাই গীতিকারের সবচেয়ে বেশি মনে পড়েছে।
পেশায় সংবাদমাধ্যমের কর্মী অনির্বাণ। এর পাশাপাশিই চলে লেখালেখি। এর আগে ব্যান্ডের জন্য, নাটকের জন্য গান লিখেছেন অনির্বাণ। এই প্রথমবার কোনও সিনেমার জন্য গান লিখছেন। আর তা অস্কারের সেরা ৮৯ গানের মধ্যে জায়গা করে নিল। কেমন অনুভূতি? অনির্বাণের কথায়, "সত্যি কথা বলতে, ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। এটা খুবই অদ্ভূত একটা অনুভূতি। এমন তো নয় যে আমি পেশাদারভাবে গান লিখি। আগে নিজের ব্যান্ডের জন্য গান লিখেছি, নাটকের জন্য লিখেছি। কিন্তু সিনেমার জন্য কখনও লিখিনি। এটা প্রথমবার লিখলাম, আর এমনটা হল। লিস্টটা প্রথমবার দেখেই ঘেঁটে গিয়েছিলাম।"
এর পরই অনির্বাণ বলেন, "এমন যে হবে ভাবিনি। সকালে এই খবরটা না পেলেও যেমন আছি তেমনই থাকতাম। তবে প্রথম খবর শোনার আবেগে ঠাকুরদা বাণী কুমার ও দাদা চন্দ্রিলের কথা মনে পড়েছিল। বিশেষ করে বাণী কুমার। ছোটবেলা থেকেই তাঁর কথা শুনে বড় হয়েছিল। দাদা তো জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন। এই দুটো মুখই ভেসে উঠেছিল চোখের সামনে। এই গানটা আসলে একটি কন্যাসন্তানের, আমি নিজে একজন কন্যাসন্তানের বাবা। ওর জন্মের পর থেকে পৃথিবীটাকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পালটে গিয়েছে। ছবিটা ২৭ তারিখে রিলিজ করছে, দেখলে বুঝতে পারবেন, দুই মা ও কন্যসন্তানের কত সুন্দর গল্প। গোটা একটা জীবনের সফর। আমি যেহেতু মেয়ের বাবা তাই আরও ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম।"