সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বলিউড কিংবা দক্ষিণী সিনে ইন্ডাস্ট্রির তুলনায় বাংলা পিছিয়ে কেন? একাধিকবার এই প্রশ্ন আলোচনা-সমালোচনার শিরোনামে উঠে এসেছে। বাজেটের সমস্যা কিংবা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে যে পরিমাণ বিপুল টাকা খরচ হয়, সেই টাকা টলিউডের ক্যাশবাক্সে না থাকার সমস্যাও উঠে এসেছে বারবার। এবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিনের অনুষ্ঠানে বিশ্বের সিনেনির্মাতাদের জন্য বাংলার দরজা খুলে দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বরাবর বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রির পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এবার ৩১তম কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অন্তিম লগ্নেও বিশ্বসিনেমার মানচিত্রে টলিউডের উজ্জ্বল মাইলফলক গড়ার জন্য বিদেশি পরিচালকদের বাংলায় এসে কাজ করার আহ্বান জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সিনেআঙিনার তাবড় ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই 'বসুধৈব কুটুম্বকম'-এর বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আপনারা আমাদের অতিথি বটে, তবে আমরা আপনাদের নিজের পরিবারের সদস্য বলেই মনে করি। আমরা ভাইবোন। আর এই গোটা বিশ্ব একটাই পরিবার। হয়তো আমরা ভিন্ন দেশের মানুষ। তবে বাংলা 'বিবিধের মাঝে মিলন মহান' মন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা পারস্পারিক বোঝাপড়ায় বিশ্বাসী। বাংলার মানুষ যেমন ভালোবাসতে জানে, তেমনই আতিথেয়তাও জানে। কিফ-এ যোগ দেওয়া ৩৯টি দেশের সমস্ত সিনেব্যক্তিত্বদের ধন্যবাদ জানানোর জন্য আজ আমি এখানে এসেছি।" এরপরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সিনেনির্মাতাদের টলিউডের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার আমন্ত্রণ জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ছবি- কৌশিক দত্ত)
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, "আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আসার জন্য। পরেরবারও আসবেন। আশা করি, আগামি দিনে সুনিশ্চিত কোনও লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে ফিরবেন। বাংলায় পরিকাঠামো আছে। প্রতিভাও আছে। লোকেশন হিসেবে জঙ্গল-জলাশয় থেকে বঙ্গোপসাগর রয়েছে। পাহাড়ি এলাকাও পাবেন। বাংলার পরিচালক, শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করুন। হলিউড খুব জনপ্রিয়, বলিউডও তাই। ওদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা আছে। তবে বাংলা ভারতের কালচারাল ক্যাপিটাল। তাই আপনারা যদি টলিউডের সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করেন আমি কথা দিতে পারি, টলিউড বিশ্বের সেরা সিনেমা উপহার দিতে পারে। যদি আপনারা একটু উৎসাহ জোগান। আমরা চাই বাংলা সিনেমা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ুক।" সাতদিন ব্যাপী এই সিনেউৎসবে যদি কিছু ভুল হয়, তার জন্যেও আপনজনের মতো ক্ষমা চেয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষপাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, "কিফ উৎসব জনগণের উৎসব। ৩২তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আরও বড় হবে।"
উল্লেখ্য, সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চে হাজির ছিলেন, গৌতম ঘোষ, শান্তনু মৈত্র, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, হরনাথ চক্রবর্তী, অরিন্দম শীল, ইন্দ্রনীল সেন, মহুয়া মৈত্র এবং দেব-সহ বাংলা সিনেদুনিয়ার একাধিক শিল্পী।
