সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সল্টলেকের ক্যালকাটা হার্ট ইন্সিটিউটে ভর্তি ছিলেন মনোজ মিত্র (Manoj Mitra)। সোমবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮.৫০ মিনিটে সব শেষ। সাজানো 'বাগান' ছেড়ে চিরশান্তির দেশে পাড়ি দিলেন 'বাঞ্চরাম'। মনোজ মিত্রর প্রয়াণে শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে শোকবার্তা দিলেন তিনি।
বর্তমানে দার্জিলিংয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করে তিনি লেখেন, 'প্রখ্যাত নট, নাট্যকার ও পরিচালক, 'বঙ্গবিভূষণ মনোজ মিত্র'র প্রয়াণে শোকাহত হলাম। বাংলা থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান ছিল অসামান্য। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানাই।'
১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের সাতক্ষিরা জেলার ধূলিহর গ্রামে মনোজ মিত্রের জন্ম। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে অনার্স-সহ স্নাতক হন তিনি। এই কলেজেই থিয়েটারে দীক্ষিত হন। সঙ্গী হিসেবে পান বাদল সরকার, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের মতো ব্যক্তিত্বদের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ করেন। ডক্টরেটের জন্য গবেষণা শুরু করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে কলকাতায় মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু মনোজ মিত্রর। ১৯৭৯ সালে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতা করেন।
যদিও প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’ লেখেন ১৯৫৯ সালে কিন্তু ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ (প্রথম নির্দেশনা) নাটকের মাধ্যমে তিনি পরিচিতি তৈরি হন। ওই নাটকটির মঞ্চ নির্দেশনা করেন বিভাস চক্রবর্তী। নাট্যগোষ্ঠী ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠাতাও মনোজ মিত্র। থিয়েটারের মতোই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও খ্যাতি অর্জন করেন কিংবদন্তি শিল্পী। সারা জীবনে বহু পুরস্কার, সম্মান পেয়েছেন এই শিল্পী। বলা বাহুল্য, মনোজ মিত্রের মৃত্যু একটি যুগের অবসান।