সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় সিনেদুনিয়ার পর্দায় কি শুধুই রক্তারক্তি, হিংসার রমরমা? প্রশ্ন তুলল রাধিকা আপ্তের (Radhika Apte) এক সাম্প্রতিক মন্তব্য। কোভিড পরবর্তী অধ্যায়ে দেশের সিনেমাশৈলীতে যে এক সমূহ পরিবর্তন এসেছে, একথা অনস্বীকার্য। বক্স অফিসের মন্দা বাজার চাঙ্গা করতে নাকি দর্শকমহলের স্বাদবদলের চাহিদাতেই সিনেমা-সিরিজে একচেটিয়াভাবে হাইভোল্টেজ অ্যাকশন, রক্তারক্তি, হিংসার কাহিনি তুলে ধরা হচ্ছে? এহেন প্রশ্ন বিগত কয়েক বছরে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। এমনকী সিনেমার পর্দায় নারীচরিত্র পরিবেশন নিয়েও সমালোচিত হতে হয়েছে বলিউড কিংবা দক্ষিণী ছবিকে। এবার সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে মুখ খুলেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাধিকা আপ্তে।
সিনেমার পর্দায় হিংসা, রক্তারক্তির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। রাধিকার মন্তব্য, "বর্তমানে বিনোদনের নামে যেভাবে হিংসাকে বিক্রি করা হচ্ছে, তাতে আমি ভীষণই বিরক্ত এবং কথাটা আমাকে খোলাখুলিভাবেই বলতে হচ্ছে যে, আমি এমন এক পৃথিবীতে শিশুকে বড় করতে চাই না যেখানে হিংসাত্মক ছবিকে বিনোদন বলে চালানো হয়। কারণ আমি একেবারেই এর মোকাবিলা করতে পারি না।" এখানেই অবশ্য থামেননি রাধিকা আপ্তে! অভিনেত্রীর উদ্বেগ, বর্তমানে দর্শককে শক দিয়ে সিনেমার গল্প বলা হয়!
'সেক্রেড গেমস' অভিনেত্রীর সংযোজন, "আমি যদি সেরকম একটা মানুষের গল্প বলি, যে কাউকে কুচি কুচি করে কেটে ফেলছে, তাহলে আমার তো ওই কাটাকাটির দৃশ্যটা দেখানোর দরকার নেই। কিংবা ওই মানুষটির সঙ্গে যেরকম ভয়াবহ আচরণ করা হচ্ছে, সেটা তো আমি দেখাব না। এটাকে স্টোরি টেলিং বলে না। আমি অন্তত এরকম দেখিনি। আর এই সিনেমাগুলি সমাজে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আর দর্শকরাও সেগুলো গিলছে দেখে আমি আরও বিরক্ত বোধ করছি।" রাধিকার এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় নেটপাড়ায়! বিশেষ করে 'ধুরন্ধর' মুক্তির আবহে অভিনেত্রীর এহেন মন্তব্যে অনেকেই মনে করছেন, রাধিকার নিশানায় রণবীর সিং অভিনীত সিনেমা। একাংশ আবার 'অ্যানিম্যাল'-এর প্রসঙ্গও তুললেন। কিন্তু এহেন মন্তব্যের জেরে আপাতত বেধড়ক ট্রোলের শিকার রাধিকা আপ্তে।
নেটভুবনের একাংশ তাঁর অভিনীত 'রক্তচরিত্র', 'সেক্রেড গেমস' সিনেমার উদাহরণ দেখিয়ে বলছেন, 'হ্যাঁ, আপনার অভিনীত এই ছবিগুলি তো আদ্যোপান্ত ফ্যামিলি ড্রামা তাই না?' কেউ বা বললেন, 'আপনার ঘৌল আর সিস্টার মিডনাইট ছবি দুটো তো হিংসা-নগ্নতায় ভর্তি। রাধিকা এবেলায় আপনার আপত্তি নেই, কিন্তু ধুরন্ধর-এর মতো দেশাত্মবোধক ছবির ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?' কেউ বা রাধিকাকে সরাসরি 'হিপোক্রিট' বলেও তোপ দাগলেন। কেউ বা আবার বাল্যর সঙ্গে দক্ষিণী সিনেমার কথা মনে করিয়ে রাধিকাকে কটাক্ষ করলেন, 'এই ছবিটায় তো আপনার হিরো একশোজনকে কুঠার দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছিল! এবেলা?'
