সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালের ১৪ জুন। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর পরিবারকে। টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও ওঠে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। ২৭ দিন বিনিদ্র রজনী কাটাতে হয়েছে তাঁকে শ্রীঘরে। জেলমুক্তির পর লাইমলাইটের অন্তরালে থেকেও রেহাই পাননি সোশাল মিডিয়া ট্রায়াল থেকে। মুম্বই নিবাসী বঙ্গকন্যা রিয়া চক্রবর্তীর নামোল্লেখ করে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল বঙ্গসমাজকেও। জীবনের কালো অধ্যায় কাটিয়ে অনেক আগেই মূলস্রোতে ফিরেছেন রিয়া। চলতি বছরের মার্চ মাসে সিবিআইয়ের জমা দেওয়া অন্তিম রিপোর্টে সুশান্ত মামলায় শোপমোচন হয়েছে তাঁর। এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে দেওয়া নতুন তথ্যে 'গোল্ড ডিগার' অপবাদ ঘুচল রিয়া চক্রবর্তীর।
প্রেমিকা থাকাকালীন রিয়া চক্রবর্তীর জন্য কত টাকা খরচ করেছেন সুশান্ত? সম্প্রতি সিবিআইয়ের তরফে সেই হিসেব নিকেশ ফাঁস করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সহবাসের সম্পর্কে থাকাকালীন সুশান্ত রিয়ার জন্য দেদার টাকা খরচ করতেন। স্বেচ্ছায় ১৬ লক্ষ টাকা বের করে দিয়েছিলেন নিজের পকেট থেকে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন রিয়া-সুশান্ত। ২০১৯ সালে সুশান্ত সিং রাজপুত নিজেই রিয়া এবং তাঁর ইউরোপ ট্যুরের টিকিট কেটে দেওয়ার জন্য তৎকালীন ম্যানেজার শ্রুতি মোদিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অতঃপর এটিকে আর্থিক জালিয়াত বলে গণ্য করা যায় না। কারণ সুশান্ত স্বেচ্ছায় সেসব খরচ করেছেন। এমনটাই জানানো হয়েছে সিবিআইয়ের রিপোর্টে।
উল্লেখ্য, সুশান্তের পরিবারের তরফে রিয়ার বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, রিয়ার বিরুদ্ধে সুশান্তের ১৫ কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার অভিযোগেও মামলা দায়ের হয়। এবার বছর পাঁচেক বাদে যাবতীয় অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন রিয়া চক্রবর্তী। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলায় আগেই রিয়া চক্রবর্তীকে ক্লিনচিট দিয়েছিল সিবিআই। এরপরই বলিউডের একাংশ অতীত ঘেঁটে সকলকে মনে করিয়ে দেয়, একদিন এই মেয়েটিকেই ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। কোণঠাসা করে একঘরে করা হয়েছিল। অবশেষে সত্যিটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সিবিআইয়ের জমা দেওয়া দুটি মামলারই অন্তিম রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সুশান্তের মৃত্যুর সপক্ষে কোনও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র বা অন্যায় কাজের সন্ধান মেলেনি। জীবনের কালো অধ্যায় কাটিয়ে আপাতত স্বস্তিতে রিয়া চক্রবর্তী এবং তাঁর পরিবার। অভিনেত্রীর উপর থেকে ঘুচেছে ‘ডাইনি’ অপবাদ। গত মার্চে অভিনেত্রীর আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে জানিয়েছিলেন, “আমরা সিবিআইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ মামলার প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে এতে ইতি টানার জন্য। সোশাল মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় যে পরিমাণ মিথ্যা প্রচার করা হয়েছিল তার কোনও প্রয়োজন ছিল না। অতিমারীর সময় বলে সকলেই টিভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিই মন দিয়েছিল। নিরীহ লোকদের ধরে ধরে মিডিয়া এবং তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের সামনে হাজির করানো হয়েছিল।” পাশাপাশি রিয়া চক্রবর্তীকে ২৭ দিনের জন্য জেলে থাকতে হয়েছিল সেকথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময় অভিনেত্রীকে নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা পেতে হয়েছিল। তাঁর কথায়, “এই দেশটা এখনও অত্যন্ত নিরাপদ। এবং আমাদের বিচারব্যাবস্থার কারণে ন্যায়বিচার প্রত্যাশী সকলেরই আশা রয়েছে। সত্যমেব জয়তে।”
