সুকুমার সরকার, ঢাকা: পিতৃত্বের দাবি জানিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানা এলাকায়। বাবা-মার উপস্থিতিতে সন্তানের দাবিদার অপর যুবক। কিন্তু তিনি কি পাবেন নবজাতকের দায়িত্ব? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধের দায়ে আরও ২ রাজাকারের ফাঁসির আদেশ]
ঘটনার সূত্রপাত ২৫ ফেব্রুয়ারি। জানা গিয়েছে, এদিন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হালুয়াঘাট থানার দ্বারস্থ হন বছর ১৮-এর কিশোরী। তিনি জানান, বাউসা গ্রামের বাসিন্দা আক্তার উদ্দিনের ছেলে ইলিয়াসের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তাঁর। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার সহবাস করে ইলিয়াস। পরে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ইলিয়াসকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে ওই কিশোরী। অভিযোগ, সেই সময় সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন ইলিয়াস। এরপর স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য তসলিমাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হাজির হন ওই কিশোরী। পুলিশ, প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে সন্তানের বিষয়টি অস্বীকার করলেও, কিশোরীর সঙ্গে প্রণয়ের কথা স্বীকার করে নেন ইলিয়াস। এরপর দুই পরিবারের স্বজনদের উপস্থিতিতে থানাতেই ধুমধাম করে বিয়ে সম্পন্ন হয় তাঁদের।
বিয়ের পর স্বাভাবিক ছন্দেই দিন কাটছিল তাঁদের। বিয়ের দুই মাস পরেই ওই কিশোরী সন্তান প্রসব করে। অভিযোগ এরপর হঠাৎই সন্তানের পিতৃত্বের দাবি জানায় এক যুবক। সন্তানের পিতৃত্বের অধিকার চেয়ে ইউপি সদস্য তসলিমা-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন আলাল। এতে প্রশ্ন ওঠে হঠাৎ কেন সন্তানের পিতৃত্বের দাবি জানাল আলাল? এ বিষয়ে কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, করুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইদ্রিশ আলির পুত্র আলাল মিয়াঁই তাঁর সন্তানের বাবা।
[আরও পড়ুন: যৌনতার সময় আরেক সম্পর্কের কথা জানাজানি, প্রেমিককে খুন তরুণীর]
এই প্রসঙ্গে কিশোরী জানান, ‘আমি কসমেটিক কিনতে আলালের দোকানে যেতাম। সেই সময় জোরপূর্বক দোকানের পিছনে নিয়ে গিয়ে আমায় ধর্ষণ করে আলাল। এরপর আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। আমার সন্তানের প্রকৃত পিতা আলাল।’ তিনি জানিয়েছেন, ৮ নং নড়াইল ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তসলিমা খাতুনই তাকে ফুঁসলিয়ে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতে বাধ্য করেছিলেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে হালুয়াঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এই কিশোরী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ করলে, দু’পক্ষের অভিভাবকদের থানায় ডেকে নিয়ে আসা হয়। উভয়ের সম্মতিক্রমে অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ইসলাম নিয়মানুযায়ী তাদের বিয়েও হয়। তারপর এহেন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এখন সন্তানের দায়িত্ব পাবেন কে তা নিয়ে শুরু জল্পনা।