shono
Advertisement

Breaking News

পরকীয়ায় বাধা ছেলে! সন্তানকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে

"অন্যায়ের উপযুক্ত শাস্তি চাই", দাবি প্রতিবেশীদের।
Posted: 09:21 PM Sep 13, 2021Updated: 09:21 PM Sep 13, 2021

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: বাড়ি থেকে উদ্ধার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের দগ্ধ দেহ। খুনের অভিযোগে আটক ছাত্রের মা। সোমবার ঘটনাটি ঘটে নদিয়ার নবদ্বীপ থানার দণ্ডপাণিতলাঘাট এলাকায়। এদিন বিকেল পর্যন্ত নবদ্বীপ থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশ স্বতপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

মৃত ছাত্রের নাম দেবজিৎ দাস (১৪)। নবদ্বীপের বকুলতলা হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শান্ত ও নিরীহ প্রকৃতির ছেলে হিসেবেই এলাকায় পরিচিত ছিল দেবজিৎ। পড়াশোনায় খারাপ ছিল না। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল দেবজিৎ। তার বাবা দুলাল দাস পেশায় হকার। ব্যান্ডেল-কাটোয়া সেকশনের ট্রেনে হকারি করেন। প্রতিদিন ভোর তিনটে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে গজা তৈরি করে সেই গজা নিয়ে সকাল ছ’টা নাগাদ বেরিয়ে যান। কাজকর্ম শেষ করে ফিরতে বেলা হয়ে যায় তার।

অন্যান্য দিনের মত সোমবার সকাল ছ’টা নাগাদ ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন দুলালবাবু। বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ফোন পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন। যদিও ততক্ষণে তাঁর একমাত্র ছেলের অগ্নিদগ্ধ দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। ছেলের মৃত্যুতে স্ত্রীর উপর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন দুলালবাবু। তাঁর কথায়, “ছেলে ওর মায়ের কাছে ঘুমাত না। কাজে যাবার সময় আমি ছেলেকে ডেকে দিয়ে গিয়েছিলাম, টিউশন পড়তে যাবে বলে। টিউশন পড়েও এসেছিল। কিন্তু তারপর কী করে এমন হল, তা আমি বুঝে উঠতে পারছি না। আমার ছেলেকে কেমন করে মারার ফন্দি করল, আমি জানি না। ও সংসার করতে চায় না। ওর সংসারে মন নেই। বাড়িতে তো ছেলের সঙ্গে ওর মা ছাড়া আর কেউ ছিল না। তাহলে কেমন করে এমন হল?”

[আরও পড়ুন: রেলের বগি তৈরির কারখানায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, জখম কমপক্ষে ১৫ শ্রমিক]

দেবজিতের মা সীমা দাসের বক্তব্য, “ছেলে বাড়ি ফেরার পর ও নিজেই চা করেছিল। আমি আর ও দু’জনে চা খাই। এরপর ছেলে পাশের ঘরে পড়তে যায়। আমি কাজকর্ম সেরে আমার ঘরে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ করেই আগুনের পোড়া গন্ধ পাই। পাশের ঘরের দরজার ছিটকিনি ভেতর থেকে লাগানো ছিল। জানলা দিয়ে আমি তাকিয়ে দেখি, ছেলে আগুনে পুড়ে যাওয়া অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এরপর আমি ধাক্কাধাক্কি করে দরজা খুলি। ও নিজেই গায়ে আগুন লাগিয়েছিল। কিন্তু কেন যে ও এমন করল, তা আমি বুঝতে পারছি না।”

যদিও প্রতিবেশীরা সীমা দাসের যুক্তি মানতে কিছুতেই রাজি নন। তাদের ধারণা, দেবজিতের মৃত্যুর পেছনে সীমা দাসের হাত রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেবজিতের মুখ, মাথা, শরীরের নিম্নাঙ্গে আগুনে পোড়ার কোনও চিহ্ন ছিল না। এরপরই প্রতিবেশী শান্তি দাস, লক্ষ্মী দাসরা প্রশ্ন তোলেন, “ছেলে যদি আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যাই করে থাকে, তাহলে তার মাথার চুল, মুখ কিছুই পুড়ল না কেন? ঘরের কোন জিনিসপত্রও তো পোড়েনি। হয়তো আগে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে মেরে ফেলে ছেলেটির বুকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের উপযুক্ত শাস্তি চাই।” প্রতিবেশীদের সন্দেহ পরকীয়ার জেরেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন সীমা। 

একমাত্র নাতির অকাল মৃত্যুর জন্য সরাসরি পুত্রবধূকেই দায়ী করেছেন দেবজিতের ঠাকুমা লক্ষ্মীরানী দাস। তাঁর অভিযোগ, “আমার ছেলের বউ-ই এই কাজ করেছে।” পুলিশ অবশ্য তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনরোষের আঁচ পেয়ে সীমা দাসকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।

[আরও পড়ুন: বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার তদন্তে NIA]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার