স্টাফ রিপোর্টার: যে ক্লাবে টানা ৫০ বছর সভাপতি ছিলেন তিনি, সেই একডালিয়া এভারগ্রিন (Ekdaliya Evergreen) ক্লাবের ভবনের নামকরণ হচ্ছে তাঁরই নামে। শুধু তাই নয়, ক্লাব চত্বরেই বসানো হবে তাঁর পূর্ণাবয়ব মর্মরমূর্তিও। প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে (Subrata Mukherjee) শ্রদ্ধা জানিয়ে এমনই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের সদস্যরা। অনুরাগী ও সংঘের সদস্যদের এমন ইচ্ছার কথা শনিবার জানান, একডালিয়া এভারগ্রিনের কোষাধ্যক্ষ ও প্রয়াত নেতার ৪৮ বছরের ছায়াসঙ্গী স্বপন মহাপাত্র। তাঁর কথায়, “সিদ্ধান্ত আমাদের হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ছন্দবাণী বউদির সম্মতি নিয়েই ক্লাব ভবনের নাম বদলে দেব। সরকার ও পুরসভার অনুমতি নিয়ে দাদার মূর্তিটাও বসানো হবে।” এভাবেই অভিভাবকসম প্রিয়জনকে কাছে রাখতে চান ক্লাবসদস্যরা।
১৯৭২ সাল থেকে এই ক্লাব ও পুজো কমিটির সভাপতি ছিলেন প্রয়াত পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। দুর্গাপুজোও পরিচিত, আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল ‘সুব্রত মুখার্জির সাবেকি প্রতিমা’র শারদোৎসব নামে। রাজ্য সরকার ও পুরসভা প্রয়াত জননেতার স্মৃতিতে কী কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলেছেন, “সুব্রতদার বিষয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা শুধু কার্যকর করব।”
[আরও পড়ুন: ‘দল ছাড়তে পারলে অনেক গুপ্ত কথাই ফাঁস করতাম’, ফের বিস্ফোরক তথাগত]
পাঁচ দশকের সভাপতির শেষকৃত্য হয়ে গিয়েছে শুক্রবার। তারপরও অধিকাংশ ক্লাব সদস্য শোক সামলে উঠতে পারেননি। বহু প্রবীণ সদস্য বলছেন, “মনে হচ্ছে উনি বাইরে কোথাও মিটিং করতে গিয়েছেন, দু’দিন পরেই ফিরে আসবেন।” প্রিয়জনের মৃত্যুর পর বাড়িতে যেমন দিবারাত্রি প্রদীপ জ্বলে, ক্লাবেও তাই হচ্ছে। শোকের গভীর ছায়া এখনও রয়েছে প্রয়াত মন্ত্রীর বালিগঞ্জের ‘সন্তোষ গার্ডেন’ বহুতল আবাসন থেকে বালিগঞ্জ (Ballygunj) বিধানসভা কেন্দ্রের সাতটি ওয়ার্ডেই। তাঁর স্ত্রী ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে এসে দেখা করে গিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সস্ত্রীক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। এখনও বাড়ির অফিসঘর, বসার ঘরে থেকে শুরু করে সর্বত্রই সুব্রতবাবুর ব্যবহার্য সামগ্রী ও ছবিতে ঠাসা।
[আরও পড়ুন: কলকাতা-হাওড়ার পুর নির্বাচনের-সূচি চূড়ান্ত! কমিশনের সিলমোহরের অপেক্ষা]
পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) বলছিলেন,“সবই আছে, শুধু সুব্রতদা নেই।” কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে শনিবারও বহু অনুরাগীরা প্রয়াত নেতার বাড়িতে ও ক্লাবে এসে শ্রদ্ধা জানান। এক ফাঁকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে পারলৌকিক ক্রিয়া ও অন্যান্য আচার-সূচি নিয়ে কথা বলেন সুব্রতজায়া ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায়। বালিগঞ্জ প্লেসের জনসেবক শ্যামাপূজা কমিটি বিসর্জনের শোভাযাত্রায় আলো নিভিয়ে সুব্রতর প্রয়াণে শোকাহত ব্যানার নিয়ে গঙ্গায় পৌঁছয়। নিজের কেন্দ্র বালিগঞ্জ বিধানসভার সাতটি ওয়ার্ডেই সুব্রতবাবুর স্মরণে পৃথক শোকসভা হবে। দায়িত্বে দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক দেবাশিস কুমার। এছাড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসও প্রয়াত নেতার স্মৃতিতে একটি পৃথক স্মরণসভা করবে বলে জানান দেবাশিসবাবু। এদিন ময়দানে রাজ্য কবাডি অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবে সুব্রতবাবুর স্মরণে শোকসভা হয়। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি দীর্ঘদিন সভাপতি ছিলেন। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার কোষাধ্যক্ষ স্বপন মহাপাত্র।