shono
Advertisement

CAA চালু হতেই খোল-করতাল নিয়ে নাচ, মঙ্গলে মমতার বার্তায় মন বদলাবে মতুয়াদের?

রাজ্যে এই মুহূর্তে ১ কোটি ৮০ লক্ষ তফসিলি জাতির প্রায় ১৭.৪ শতাংশ মতুয়া। বাংলায় ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৪টি আসন বিজেপি জিতেছিল ২০১৯ সালে।
Posted: 02:02 PM Mar 12, 2024Updated: 02:06 PM Mar 12, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে কেন্দ্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর (CAA) করেছে মূলত বাংলার সমীকরণ মাথায় রেখে। যা খানিকটা হলেও পাকে ফেলেছে রাজ্যের শাসকদলকে। অন্তত এই আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর যেভাবে মতুয়া সম্প্রদায়কে উৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে, তাতে খানিকটা হলেও প্রমাদ গুণেছে শাসকদল। সম্ভবত সেকারণেই আইন কার্যকর হওয়ার একদিন পর হাবড়ার সভা থেকে CAA ইস্যুতে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সঙ্গে সাধারণ মতুয়াদের উদ্দেশে তাঁর সতর্কবার্তা, CAA-এ নিয়ে কোনও স্পষ্টতা নেই। এই আইনে নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করলে সব হারানোর সম্ভাবনা থাকছে।

Advertisement

এদিন হাবড়ার সভায় মমতাকে বলতে শোনা গেল, “এই আইনে কোনও স্পষ্টতা নেই। পুরোপুরি ভাঁওতা। ২০১৯ সালেও করেছিল অসমে CAA-এনআরসি। ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ গিয়েছিল। তার মধ্যে ১৩ লক্ষ হিন্দু বাঙালি।” মমতার বক্তব্য,”এই আইনে দরখাস্ত করলে নাগরিক থাকা সত্ত্বেও বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন। তাহলে আপনাদের চাকরির কী হবে? সম্পত্তি কী হবে? ছেলেমেয়ের কী হবে? আবেদন করলে আপনার সব অধিকার কেড়ে নেবে। আগে আপনারা ভোট দিয়েছেন কি দেননি? আধার কার্ড আছে কি নেই? এই আইনটাই যেই আপনি দরখাস্ত করবেন, আপনি অবৈধ নাগরিক হয়ে যাবেন। আপনার কোনও অধিকার পাবেন না।”

[আরও পড়ুন: অবশেষে কার্যকর CAA, কী এই আইন? কেন এনিয়ে এত বিতর্ক?]

মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা,”আপনারা কি বিজেপির হাতে আপনার ভাগ্য দিয়ে দেবেন? শুধু একটা ভোটের জন্য, দুটো সিটে জেতার জন্য আপনাদের ভাঁওতা দিচ্ছে, ধাপ্পা দিচ্ছে, সব জুমলা। মনে রাখবেন সব হারাবেন। এটাও যাবে, ওটাও যাবে। বিজেপির খেলা হচ্ছে, হিন্দুতে হিন্দুতে ভাগ করে দেওয়া। মুসলিমে-মুসলিমে ভাগ করে দেওয়া। সব রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে। এই CAA কিন্তু NRC-র সঙ্গে যুক্ত।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলছেন,”এই আইনে আবেদন করলে কাস্ট সার্টিফিকেটও বাতিল হয়ে যাবে। নতুন করে করতে হবে। মনে রাখবেন এটা এনআরসির সঙ্গে সম্পর্কিত। আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ভাঁওতা আমি মানব না। একটা মানুষ অধিকার পেলে আমি খুশি হব, কিন্তু একটা মানুষ যদি বঞ্চিত হয়, আমি কিন্তু মেনে নেব না।”

[আরও পড়ুন: CAA চালু হতেই শুভেন্দুর মুখে মতুয়াদের ‘হরি বোল’, ধরনার হুঁশিয়ারি মমতাবালার]

কিন্তু, সিএএ নিয়ে মতুয়াদের এত সাবধান করা কেন? মতুয়া সম্প্রদায়কে নিয়ে এত উদ্বেগই বা কেন? আসলে বাংলার লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha 2024) মতুয়ারা একটা বিরাট ফ্যাক্টর। মমতা যতই বলুন, মাত্র দুই আসনের জন্য বিজেপির এই আইন আনা। বাস্তব বলছে, বাংলার বেশ কয়েকটি আসনে মতুয়াদের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে রানাঘাট এবং বনগাঁ কেন্দ্রে মতুয়ারা নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। রাজ্যে এই মুহূর্তে ১ কোটি ৮০ লক্ষ তফসিলি জাতির প্রায় ১৭.৪ শতাংশ মতুয়া। বাংলায় ১০টি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৪টি আসন বিজেপি জিতেছিল ২০১৯ সালে। এর বাইরে এই কেন্দ্রগুলির আশেপাশেও ২০১৯-এ ভালো ফল করেছিল গেরুয়া শিবির (BJP)। সেবার বিজেপি মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তাঁদের সমর্থন আদায় করেছিল। তৃণমূল এবার সেই ভোটব্যাঙ্কে সিঁধ কাটার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষবেলায় নাগরিকত্ব আইন চালু হয়ে যাওয়ায় মতুয়ারা ফের একচেটিয়া বিজেপির দিকে ঝুঁকে যেতে পারেন, এই আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রী মরিয়া চেষ্টা করলেন তাঁদের মন পেতে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার