সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা থেকে শীতের (Winter) বিদায়পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু উত্তর ভারতে শীত যেন দিনদিন আরও জাঁকিয়ে বসছে। আর শীতের কোপে পড়ে প্রাণও হারাচ্ছেন অনেকে। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) উষানগরে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর যেভাবে মৃত্যু হল, তাতে শীতকেই ‘ভিলেন’ বলছেন সকলে। এমনকী চিকিৎসকরাও বিশেষ পরামর্শ দিচ্ছেন। শৈত্যপ্রবাহের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এছাড়া হার্টের অন্যান্য রোগেও অনুঘটকের মতো কাজ করে শৈত্যপ্রবাহ। তাই তা থেকে সাবধানে থাকতে হবে সকলকেই। উষানগরের ছাত্রী মৃত্যুর (Student Death) ঘটনা ঘিরে সতর্ক করা হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার। সাধারণতন্ত্র দিবসের (Republic Day) আগে মহড়ার জন্য স্কুলে গিয়েছিল উষানগরের একাদশ শ্রেণির বৃন্দা ত্রিপাঠি। সেখানেই সে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসক তার সিপিআর (CPR)অর্থাৎ কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাস্তাতেই বৃন্দার মৃত্যু হয়েছিল। তবে এই মৃত্যুর নেপথ্যে শীতকে দায়ী করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে একাধিক বিমান দুর্ঘটনা, ভাঙল বায়ুসেনার মিরাজ ও সুখোই বিমান]
পরে বৃন্দার দেহ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডায় তার চোয়াল আটকে গিয়েছিল। সেই কারণে অসুস্থ বোধ করে ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়তে থাকে। তারপর হার্ট অ্যাটাক এবং মৃত্যু। কোনও সময়ই পাওয়া যায়নি চিকিৎসা করার। মৃত্যুর সময় বৃন্দার পরনে ছিল হালকা একটি ট্র্যাকসুট মাত্র। সেই কারণে শীত প্রতিহত করতে পারেনি সে। এ বিষয়ে কার্ডিওলজিস্ট অনিল ভারানি বলেন, খুব ঠান্ডায় মানব শরীরে বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণে তারতম্য ঘটে। তার জেরে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। আর তাই আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা বাড়ে। তাঁর পরামর্শ, এত ঠান্ডায় পুষ্টিকর খাবার (Nutritious food) খেতে হবে। নজর দিতে হবে ভিটামিন-ডি’তেও। তাহলেই একমাত্র শীতের সঙ্গে যুঝে চলা সম্ভব।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনের ঠিক আগেই মেঘালয়ে উদ্ধার হিসাব বহির্ভূত প্রায় ৯ লক্ষ টাকা! ছড়াল চাঞ্চল্য]
দিল্লির বর্ষীয়ান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অরুণ কুমারও জানাচ্ছেন, “শীতে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষত বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি থাকে। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, কমবয়সিদের মধ্যেও এই প্রবণতা বাড়ছে। আসলে ঠান্ডায় রক্ত তঞ্চন (Blood Clot) হয় খুব দ্রুত। তাই রক্তচাপ ওঠানামা করে। ফাইব্রিনোজেনের মাত্রাও কমে যায় অনেকটা। সবমিলিয়ে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়। আর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে।” তাই শীত জাঁকিয়ে পড়ুক বা না পড়ুক, তাপমাত্রা কমলেই সচেতন হন।