সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে আসন্ন ছয় বিধানসভার উপনির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট, না একা লড়া হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বই। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও যাওয়া হবে কি না সেটাও জানাবেন সেই কেন্দ্রের নেতা-নেত্রীরা। জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকে এমনই ঘোষণা করেছেন নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
যেহেতু পুজোর পরই উপনির্বাচন হবে তাই এদিনের বৈঠকে কেন্দ্র ধরে ধরে সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতিদের নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করতেও নির্দেশ দেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরি যেমন একবগ্গাভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে সিপিএমকে আঁকড়ে ধরেছিলেন সেই পথে যে শুভঙ্কর হাঁটছেন না তা এদিন তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এদিন ‘তৃণমূলের সঙ্গে জোট নয়’ এমন কথা যেমন তিনি বলেননি, তেমনই সরাসরি উপনির্বাচনে জোড়াফুলের হাত ধরবেন বলেও ঘোষণা করেননি। যদিও তিনি বলেছেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোটে তো আমরা সবাই আছি। বিজেপির বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা জোটের কথা বলব। যাঁর সঙ্গে মিলবে তাঁর সঙ্গে থাকব।’’ জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার কর্মবিরতি নিয়েও কটাক্ষ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বলেছেন, ‘‘আন্দোলন মানে সব বন্ধ নয়। পরিষেবা চালু রেখে আন্দোলন করা বাঞ্ছনীয়। কোনও চিকিৎসক নিশ্চয়ই চাইবেন না, রোগী মারা যাক।’’ এক প্রশ্নের উত্তরে এদিন শুভঙ্কর জানান, আর জি কর থেকে শুরু করে রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধীকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেবেন।
জেলা কংগ্রেস সভাপতিদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ‘‘প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে কাদের সঙ্গে জোট চান সেই রিপোর্ট নেবেন। নিচুতলায় অন্য দলের সঙ্গে জোট নিয়ে প্রয়োজনে সেখানকার নেতারাই কথা বলবেন। অবশ্য ভোটে জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি।’’ বৈঠক শেষে শুভঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, ‘‘ভোট রাজনীতিতে বামেদের সঙ্গে জোট রয়েছে। আপাতত ভোট নেই। তাই কথা হয়নি। স্থানীয় নেতৃত্বের রিপোর্ট নিয়ে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ পুজোর পর লাগাতার কর্মসূচির পাশাপাশি পরপর জেলা সফর করে সাংগঠনিক হালহকিকত সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন প্রদেশ সভাপতি।
উপনির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি দলের একাধিক কর্মসূচিও ঘোষণা করেন শুভঙ্কর। কর্মসূচিগুলি হল–১) বন্যাকবলিত জেলায় ত্রাণ বিলিতে দলবাজি নিয়ে জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও। ২) নারী সুরক্ষায় সামাজিক আন্দোলনে থাকবে কংগ্রেস। ৩) ২ অক্টোবর মহালয়ার দিন ব্লকে ব্লকে প্রতিবাদ। ৪) স্বাস্থ্য দূর্নীতি নিয়ে জেলায় জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ডেপুটেশন। এদিন তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রদেশ সভাপতি বিধানভবনে সভাপতির নির্দিষ্ট ডায়াস-চেয়ারে বসে বৈঠক না করে নিচে নেমে জেলা সভাপতিদের উল্টোদিকে চেয়ার নিয়ে মুখোমুখি বসে বৈঠক করেন শুভঙ্কর। শেষে রাজ্যে দলের সংগঠন নিয়ে কিছুটা মজার সুরেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উদাহরণ দিয়ে প্রদেশ সভাপতি বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছে দলের শরীর এমনভাবে তৈরি করো যাতে করোনার সময়েও ঘোরাঘুরি করা যায়।’’ এদিনই আবার অধীর চৌধুরি বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন।