shono
Advertisement

বামনেতার সঙ্গে বৈঠক ফাঁসে অস্বস্তিতে বিজেপি, ‘বঙ্গভঙ্গ সমর্থন নয়’, সাফ বার্তা অশোক ভট্টাচার্যের

বামনেতা অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে রাজু বিস্তা ও শংকর ঘোষের বৈঠক নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
Posted: 09:01 AM Oct 26, 2022Updated: 09:04 AM Oct 26, 2022

অভিজিৎ ঘোষ: বিজেপি-সিপিএমের বৈঠকের খবর ফাঁস হয়ে যেতেই, প্রবল অস্বস্তিতে দুই পক্ষই। সিপিএমের পক্ষ থেকে সমানে সাফাই দেওয়া হচ্ছে। আর বিজেপি ধোঁয়াশার পরিবেশ তৈরি করে সিপিএমের (CPM) অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বস্তুত, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রবল চেষ্টা। আর সেই কারণেই বিজেপির এক সাংসদ ও বিধায়ক সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক করে যাওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রেস বিবৃতি দিয়ে অশোক ভট্টাচার্যকে বলতে হয়েছে, ওই বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক আলোচনাই হয়নি!

Advertisement

মঙ্গলবার বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ও বিধায়ক শংকর ঘোষ-সহ ১০-১২ জন বিজেপি নেতা শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্যর (Ashok Bhattacharya) বাড়িতে যান। চা-পানের সঙ্গে সেই আলোচনায় নানা প্রশ্ন উঠে আসে। সেখানেই বিজেপি বাংলা ভাগের প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের সাহায্য চায়। খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য। সংবাদ প্রতিদিন-এ প্রকাশিত খবর নিয়ে সব মহলেই তীব্র প্রতিক্রিয়া। কী বলছেন অশোক ভট্টাচার্য? তাঁর বক্তব্য, “ব্যাপারটা ওই রকম নয়। ওরা দীপাবলি উপলক্ষে এসেছিল। কিছু উপহারও ছিল। আমি বললাম এসেছ যখন চা খেয়ে যাও।” কিন্তু আলোচনা কী হল? বৈঠকে হাজির এক বিজেপি নেতার চিমটি কাটা উত্তর, দু’জন ডাক্তারের দেখা হলে সেখানে তো চিকিৎসার কথা উঠবেই! চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে রাজুর জিজ্ঞাসা, ” কেয়া হাল দাদা বঙ্গাল কা?” অশোকের সহাস্য জবাব, “য্যায়সা ভি হো, বঙ্গাল মে বিজেপি কা কোই চান্স নেহি হ্যায়। অউর লেফট?” শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়রের জবাব, “আগে কেয়া হোগা দেখতে রহেনা।”

[আরও পড়ুন: নবম-দশম নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জশিট নাম শান্তিপ্রসাদ, কল্যাণময়দের, নেই পার্থ]

কিন্তু বাংলা ভাগ নিয়ে বিজেপি তো সিপিএমের সাহায্য চেয়েছে! বর্ষীয়ান অশোক এবার সিরিয়াস। বললেন, বাংলা ভাগ করতে গেলে আগুনে হাত পুড়বে বিজেপির। ক্ষোভের আগুনে নিঃশেষ হবে গেরুয়া শিবির। বাংলার মানুষ রক্ত দিয়ে রুখবেন বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত। বিজেপির চক্রান্তের রাজনীতির অংশীদার হয়ে যাওয়া অশোকের উত্তর। অশোক এই সাক্ষাৎকে সৌজন্য হিসাবে দেখতে চাইলেও বিজেপির তরফে বিষয়টিকে মোটেই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। শংকর এবং রাজু প্রকাশ্যে বলছেন না বৈঠকে বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়নি। তাঁরা অশোকবাবুর প্রয়াত স্ত্রীর স্মরণসভায় আমন্ত্রণে আসা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যদিও তাঁদের সঙ্গে যাওয়া বিজেপি কর্মী-নেতারা বলছেন, অনেক কথাই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে। রাজনীতিবিদরা এক জায়গায় হলে সেখানে রাজনৈতিক আলোচনা তো হবেই।

অশোক ভট্টাচার্য প্রতিবাদপত্র দিয়ে ঘটনার বিরোধিতা করেছেন। সৌজন্য সাক্ষাতে রং চড়ানো হয়েছে অভিযোগ করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের ব‌্যাখ‌্যা, বিজেপি তো অস্বীকার করছে না। কারণ বিজেপির তো এটাই এজেন্ডা। আর তা সফল করতে সিপিএমের সাহায্য চাইবে এটাই স্বাভাবিক। ২০১৯-এর ভোটে বিজেপি-সিপিএম হাতে হাত মেলাতেই সিপিএমের ৯০% ভোট গেরুয়া বাক্সে যায়। যে কারণে ১৯টি আসনও পেয়ে যায় বিজেপি। ফলে বিজেপির সাংসদ-বিধায়ক সিপিএম নেতার সাহায্য চাইবেন, এর মধ্যে অবাক হওয়ার কিছু রয়েছে কী! বাংলা ভাগের প্রশ্ন উঠলে তৃণমূলের পাশে দাঁড়াবে সিপিএম? বিস্মিত করে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বললেন, আমি এখন আর অত বড় নেতা নই এসব নিয়ে বলার। আর সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ওখানে কী আলোচনা হয়েছে বলতে পারব না। যদি আলোচনার কথা নাই জানেন, তাহলে লম্বা-চওড়া প্রতিক্রিয়া দেন কী করে! তবে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের সাফাই, দার্জিলিংয়ের সাংসদের সঙ্গে অশোক ভট্টাচার্যর বাড়িতে যাওয়া নেহাতই সৌজন‌্য সাক্ষাৎ। তবে বাম ও বিজেপির নেতাদের এই সাক্ষাৎকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধেছেন রাজে‌্যর প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।

[আরও পড়ুন: ২ মাসে ওজন কমেছে প্রায় ১০ কেজি! স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে অনুব্রত মণ্ডল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার