রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এগরা পুরসভায় অনাস্থা ভোট স্থগিত থাকল শনিবার। এদিন সকাল ১১টায় আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সকাল থেকেই ছিল কড়া নিরাপত্তা। কিন্তু বিজেপির কাউন্সিলররা ভোর ৪টে নাগাদ পুর ভবনে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। শুধু তাই নয়, পুরসভার নাইট গার্ডকে ভয় দেখিয়ে জোর করে চেয়ারম্যান এবং বিজেপির কাউন্সিলার-সহ কয়েকজন পুরসভায় ঢোকে বলেও অভিযোগ শাসকদলের। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে এগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও বিজেপির দাবি, তৃণমূল পেশিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করবে বলে খবর ছিল। আর সেই কারণে বিজেপি কর্মীরা ভোরে পুরসভায় পৌঁছে যায়। আর তা নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গণ্ডগোল হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই আস্থা ভোট স্থগিত রাখার দাবি জানায় তৃণমূল।
এদিকে কাউন্সিলরদের মারধর, অত্যাচারের অভিযোগে তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর দেবদুল্য মাইতি এবং জয়ন্ত সাউ-এর বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। এগরা পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নায়েককে চেয়ার থেকে সরাতে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু চেয়ারম্যান স্বপন নায়েক বিজেপির ৫ জন ও কংগ্রেসের একজন কাউন্সিলারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পদ আঁকড়ে রেখেছে বলে দাবি! আর তাতেই চাপে শাসকদল তৃণমূল। এগরা পুরসভায় কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৪। তৃণমূলের ৭জন। তবে চেয়ারম্যানকে বাদ দিলে সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ জন। অন্যদিকে বিজেপির ৫ জন, কংগ্রেসের ১ জন এবং নির্দলের ১ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। নির্দলের একজন কাউন্সিলার তৃণমূলের পক্ষে ভোট দিলে আর কংগ্রেসের একজন, বিজেপির চারজন চেয়ারম্যানের পক্ষে ভোট দিলে সংখ্যা দাঁড়ায় সমান সমান। যদিও নির্দল কাউন্সিলরকে পাশে পেলেও কংগ্রেসের কাউন্সিলররা শাসকের পাশে নেই। এই অবস্থায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। আর এরপরেই এগরা পুরসভায় আস্থা ভোট ভেস্তে যায়।
এগরার বিধায়ক তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তরুন কুমার মাইতি বলেন, ''আস্থা ভোট আপাতত বন্ধ হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে চেয়ারম্যান গুরুত্ব দেননি। তাই ভোর রাতে কিছু অপরিচিত পুরসভায় ঢুকে পড়ে। তাই আপাতত আস্থা ভোট বন্ধ করার আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।'' তৃণমূল কাউন্সিলর জয়ন্ত সাউ বলেন, ''তৃণমূলের প্রতীকে জিতেও পুর চেয়ারম্যান বিজেপি কাউন্সিলরদের নিয়ে লুকোচুরি খেলছিলেন। কিন্তু এদিন যেভাবে পুরসভায় তালা ভেঙে ঢুকেছেন তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'' অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তন্ময় হাজরা বলেন, ''বিজেপি কাউন্সিলরদের আটকানোর জন্যে তৃণমূল অনেক কৌশল নিয়েছিল। কিন্তু সব কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে তৃণমূল নানান অভিযোগ তুলে ভোট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।''
