অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বিধায়কের অনুপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা হওয়ার জের। দলের নেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মন্তেশ্বরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddiqullah Chowdhury)। মেমারী ২ ব্লকের সভাপতি পদে তাঁরই মনোনীত হরিসাধন ঘোষকে ব্লক সভাপতি করা হলেও মন্তেশ্বর ব্লকে তাঁর মনোনীত আহম্মদ হোসেন শেখের পরিবর্তে আজিজুল হককে দল পুনরায় ব্লক সভাপতি করেছে। যা মোটেও পছন্দ নয় তাঁর।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল মন্ত্রীর এক ভিডিও। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ব্লক সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্তে তিনি অখুশি। প্রয়োজনে তিনি অন্যপথ অবলম্বন করতে পারেন। সেই রাস্তা তাঁর খোলা আছে। তাঁর কথায়, “আমি বুঝতে পারছি না এই ১৫ দিন আমার প্রোগ্রাম রয়েছে। এই সময়ই নাম ঘোষণা করতে হল। ২ দিন পরেই করতেন। আমার উপস্থিতিতে করতেন। আমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে এইভাবে আমাকে অপমান করা ঠিক নয়।” এরপর তিনি আরও বলেন, “আমি দলকে ভালোবাসি। দল আমাদের উপর যেন অত্যাচার না করে, অবিচার না করে। এটাই আমি অনুরোধ করছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার আশা উনি পুনর্বিবেচনা করবেন। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী প্রয়োজনে অন্যপথ অবলম্বন করতে পারবে। তার রাস্তা খোলা আছে। আমি কোনও চ্যালেঞ্জের সুরে বলিনি।”
[আরও পড়ুন: বাগুইআটি কাণ্ডের ছায়া বহরমপুরে, যুবককে অপহরণ ও খুন, রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার দেহ]
প্রসঙ্গত,পূর্ব বর্ধমান জেলায় বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতিদের নাম রাজ্য থেকে ঘোষণা করা হয়। মন্তেশ্বর ব্লকে ব্লক সভাপতি পদে থাকা আজিজুল হককে দল তৃতীয়বারের জন্য সভাপতি পদে রেখেছে। এটা মানতে না পেরে বুধবার কুসুমগ্রাম, রাইগ্রামের মতো বেশ কিছু জায়গায় আজিজুল বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটায়। তার জেরে উত্তপ্ত হয় মন্তেশ্বর। এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ব্লক সভাপতি আজিজুল হক। তিনি বলেন,“সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী আমাদের সম্মানীয় বিধায়ক। ওনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। তবে দলটা প্রথম দিন থেকেই করছি। দলের বিধায়ক সজল পাঁজা, সৈকত পাঁজার আমি ইলেকশন এজেন্টও ছিলাম।”
সিদ্দিকুল্লা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আহম্মদ হোসেন শেখকে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আমার কাছে খবর আছে আহম্মদ হোসেনকে মার্ডার করে দেবে এবং এই ছক তৈরি করছে বিজেপির ছেলেরা। এইকারণে আহম্মদ হোসেনকে সভাপতি না করায় আমি অত্যন্ত ব্যথা পেয়েছি।” এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি এই সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নয়। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হতে পারে জানে তাই দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে।”
ব্লক সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্ব থাকে জেলা সভাপতির উপর। অর্থাৎ এই ঘটনায় হিসেব মতো তৃণমূলের জেলা সভাপতির দিকেই আঙুল তুলেছেন সিদ্দিকুল্লা। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কারও কোনও অভিযোগ থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। প্রকাশ্যে এরকম মন্তব্য করার কোনও কারণ নেই।”