অভিরূপ দাস: প্রবেশপথে অ্যান্টিবডির (Antibody) কড়া পাহারা। করোনার তৃতীয় ঢেউ (Corona Third Wave) আসার আগেই ভাইরাস কাবু করার ‘প্রোটিন কোষ’ অর্জন করে ফেলেছে অনেক খুদে। এমনটাই মনে করছেন শহর কলকাতার চিকিৎসকরা।
অতি সম্প্রতি ১৮ বছরের নিচের শিশুদের জন্য শুরু হয়েছিল করোনা টিকার (Corona Vaccine) ট্রায়াল। পূর্ব ভারতে একমাত্র কলকাতার পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথেই হয় এই ট্রায়াল। ১৮ অনূর্ধ্ব ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা ছিল ট্রায়ালে। সূত্রের খবর, পঞ্চাশ জনের বেশি শিশুকে জাইডাস ক্যাডিলার ওই টিকা দেওয়া যায়নি। কারণ তাদের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে করোনার (Coronavirus) অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন আইসিএইচের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দীপ চৌধুরী।
তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মহা বিপদ। এমন আশঙ্কা শেষ পর্যন্ত বেলুনের মতো চুপসে দিতে পারে এই তথ্য। কারণ অ্যান্টিবডি মানেই যে কড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সাধারণত শরীরে দু’ভাবে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে। কোনও অসুখে আক্রান্ত হয়ে, আর সেই অসুখের টিকা নিয়ে। কোভিডের (COVID-19) ক্ষেত্রেও তাই। ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি জানিয়েছেন, ওই শিশুরাও করোনা আক্রান্ত হয়েছিল। উপসর্গ না থাকায় পরিবারের লোকেরা টের পাননি। চুপিসারে তারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে নিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভিনরাজ্য থেকে বাংলায় আসা বিমানযাত্রীদের জন্য আরও কড়া COVID বিধি, নয়া নির্দেশিকা নবান্নের]
যে কোনও সংক্রমণের পরেই শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি হল এক বিশেষ ধরনের প্রোটিনের কোষ, যা সংক্রমণকারী জীবাণুটিকে প্রতিহত করতে পারে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই বিশেষ প্রোটিন কোষে ধরাও থাকে জীবাণুটির বৈশিষ্ট্যের স্মৃতি। ফলে সেই সময়ের মধ্যে জীবাণুটি ফের আক্রমণ করলে অ্যান্টিবডি তাকে আবারও প্রতিহত করতে পারে। অর্থাৎ যতদিন অ্যান্টিবডি থাকবে করোনা তাদের কিচ্ছু করতে পারবে না।
চিকিৎসকরা মনে করছেন, শুধুমাত্র ৫০ জন শিশুই নয়, শহর কলকাতার অনেক শিশুই কোভিড আক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিন্দুমাত্র উপসর্গ না থাকায় পরিবারের লোকেরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
এখন প্রশ্ন একটাই, কতদিন নিরাপত্তা দেবে এই অ্যান্টিবডি? চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া এই অ্যান্টিবডি শরীরে কতদিন থাকবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবে সাধারণত সংক্রমণের ফলে অর্জিত এই অ্যান্টিবডির ব্যাপ্তি কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। শিশুদের শরীর প্রাথমিক পর্যায়ে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে তা জীবাণুটির গঠন সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। ফলে একটি জীবাণুর কারণে বহু ধরনের গঠনের কথা মাথায় রেখে প্রাথমিক অ্যান্টিবডি বানিয়ে নিয়েছে শরীর। টিকা নিলেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। কিন্তু টিকার অ্যান্টিবডি নির্দিষ্ট জীবাণুর নির্দিষ্ট গঠনকে প্রতিহত করার জন্যই।