সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) যখন চোখ রাঙানো শুরু করেছিল বিশ্বজুড়ে, তখনই ‘নেচার’ (Nature) পত্রিকায় প্রকাশিত হয় একটি রিপোর্ট। যাতে স্পষ্ট লেখা হয়েছিল, নিকাশি জলেও করোনা ভাইরাস বেঁচে থাকে। গত দু’বছরে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হয়েছে আমেরিকায়। এমনকী মৃত্যুর সংখ্যাটাও বেশি আমেরিকাতেই (USA)। আপাতত শৈত্যপ্রবাহে পূর্ব উপকূলের প্রদেশগুলো কাঁপছে। বরফে ঢেকেছে গোটা এলাকা। তারই মধ্যে নিউ ইয়র্কের ভাইরোলজিস্টদের নয়া রিপোর্ট আরও চিন্তার উদ্রেক হল। যাতে বলা হচ্ছে, নিকাশি নালার জলেও বাড়ছে করোনা ভাইরাস।
কোভিড সংক্রমণের গ্রাফও বেশ উপরের দিকেই। তার মধ্যেই জানা গেল, নিউ ইয়র্কের মতো শহরের নিকাশি জলেও করোনার অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকী, মিউটেশনের পর ওই জলে নাকি এমন একটি করোনার প্রজাতির প্রমাণ মিলেছে যা মানবশরীরে এখনও পাওয়া যায়নি। সমস্যা সেখানেই শুরু হয়েছে। ওমিক্রনের (Omicron) পর নিওকোভ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)জানিয়েছিল, অযথা চিন্তা বাড়ানোর দরকার নেই। কারণ, নিওকভ আগেই বাদুরের দেহে মিলেছিল। মানব শরীরে নিওকোভ আক্রান্ত হতে হলে আরও একটি মিউটেশন দরকার, যা সময়সাপেক্ষ।
[আরও পড়ুন: ‘মুসলিম গণহত্যাকারী’ চিনকে সমর্থন, তালিবানকে হুঁশিয়ারি দিল ইসলামিক স্টেট খোরাসান]
এবার নিউ ইয়র্কের (New York) নিকাশি জলে নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের আগমন ঘটায় ফের চিন্তিত বিজ্ঞানীকূল। তবে নিকাশি জলে করোনার অস্তিত্ব এর আগে ভারত, নেদারল্যান্ডস এবং ইটালিতে মিলেছিল। মিসৌরি, টেক্সাস ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্টরা সেই ২০২০ সালেই নিউ ইয়র্কের নিকাশি জলের নমুনা সংগ্রহ করে কাজ শুরু করেন।
২০২১ সাল থেকে নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের (Genome Sequencing) কাজ শুরু হয়। তারপরই তাঁরা জানতে পারেন, কোনও ডেল্টা বা ওমিক্রন নয়, সম্পূর্ণ ভিন্নগোত্রের করোনা নিউ ইয়র্কের নিকাশি জলে ছিল। এ নিয়ে আরও গবেষণার দরকার বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। গত বছর হায়দরাবাদে এবং তেলেঙ্গানায় সংক্রমণ বাড়ছে দেখে সেখানকার নর্দমা এবং শহরের নিকাশি নালা থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে হায়দরাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি (CCMB) ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি (IICT)। এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে সংঘটিত গবেষণায় হায়দরাবাদের ১০ টি সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
[আরও পড়ুন: ফের বেপরোয়া গাড়ির দৌরাত্ম্য, কাঁকুড়গাছিতে ম্যাটাডোরের চাকায় পিষ্ট মহিলা]
সেখানে গবেষকদের মতে, নিকাশি থেকে সংগৃহীত সার্স-কোভ-টু’র (SARS-Cov-2) আরএনএ সংক্রামক নয়। তাই হায়দরাবাদে ভয়ের কিছু ছিল না। কোভিড সংক্রমিত মানুষের মল থেকেও ছড়াতে পারে এই রোগ। যদিও সংক্রমণের ভাগ পরীক্ষা সাপেক্ষ। তবে ই-লাইফের সাম্প্রতিকতম গবেষণায় জানা গিয়েছে, কোভিড (COVID-19) পজিটিভের এক গ্রাম মলে রয়েছে কোভিডের ১০০ মিলিয়ন আরএনএ।