অভিরূপ দাস: তিরিশ জনের উপর ট্রায়াল হয়েছে। তার মধ্যে ১৮ জনেরই ভাইরাল লোড কমে গিয়েছে। মাত্র পাঁচদিন পরই দিব্যি সুস্থ, ঝরঝরে। করোনা ভাইরাস (Coronavirus) বধে নতুন ট্যাবলেট ‘প্যাক্সলোভিড’ নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন কলকাতার চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, অক্টোবর মাসে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে (NRS Medical College) হয়েছে এই ট্রায়াল। তা চূড়ান্ত সফল হওয়ার পর এই মূহূর্তে ডিসিজিআই (DCGI) এর এমার্জেন্সি অ্যাপ্রুভালের অপেক্ষায় ‘প্যাক্সলোভিড’।
রাজ্যের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ফ্যাসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার জানিয়েছেন, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করেছিল ৩০ জন। এদেরকে পাঁচদিনে দু’টি করে ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। একেকটি ট্যাবলেট দেড়শো মিলিগ্রাম করে। ৫ দিন পর আরটিপিসিআর (RT-PCR) টেস্ট করে দেখা গিয়েছে ষাট শতাংশেরই ভাইরাল লোড বা রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ কমে গিয়েছে। ২৮ দিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করেছে বিশেষজ্ঞরা। দেখা গিয়েছে নানান কো-মরবিডিটি (Co-morbid) থাকা সত্ত্বেও কেউই গুরুতর অসুস্থ হননি।
[আরও পড়ুন: অ্যালার্জি থাকলে মুূহূর্তে মৃত্যু ডেকে আনতে পারে চিংড়ি, কাঁকড়া, সাবধান করলেন বিশেষজ্ঞরা]
ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডে ছাড়পত্র পেয়েছে ফাইজারের (Pfizer) ট্যাবলেট ‘প্যাক্সলোভিড’। ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া এ দেশে ছাড়পত্র দিলেই শুরু হবে ওষুধ বিক্রি। পাঁচদিনে দু’টি অর্থাৎ সবমিলিয়ে ১০ টি ওষুধ খেতে হবে করোনা রোগীকে। আশা করা হচ্ছে, ১০টি ওষুধের দাম হবে হাজার টাকার মধ্যে। নীলরতনের ট্রায়ালের শর্ত ছিল, যাঁরা অংশ নেবেন তাঁরা টিকা প্রাপক হলে চলবে না। অংশগ্রহণকারীরা টিকা নিলে, সেক্ষেত্রে এই ওরাল ট্যাবলেট কতটা কার্যকর তা বোঝা যাবে না।
[আরও পড়ুন: হাইপার টেনশনে ভুগছেন? এই ৫ রকমের চা পান করলে দূর হবে সমস্যা]
ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজার করোনা নিধনের এই ট্যাবলেট তৈরি করেছে। এর আগে কোভিড রোগীদের সারিয়ে তুলতে ‘মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ তৈরি হয়েছিল। তবে তার দাম লক্ষাধিক টাকা। সাধারণের আয়ত্তের বাইরে। নতুন এই ওষুধ সেক্ষেত্রে অনেকটাই সস্তা। দশটি ট্যাবলেটের দাম ১০ হাজার টাকার মধ্যেই। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোয় যাতে সহজে এ ওষুধ পাওয়া যায়, তাই ‘মেডিসিন পেটেন্ট পুল’ এর সঙ্গে এক চুক্তিপত্রে সই করেছে ফাইজার। জেনেরিক উপাদান দেখে যাঁরা ওষুধ তৈরি করেন, তাঁদের কাছে এই ওষুধের রাসয়নিক উপাদান দেওয়া হবে। ‘প্যাক্সলোভিডে’র জেনেরিক নাম রিটনোভির। ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ড ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোর্স ওষুধ কিনে নিয়েছে।