প্রণব সরকার, আগরতলা: বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে সরগরম ত্রিপুরা (Tripura)। একদিকে সোমবার বিশাল মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা করল তৃণমূল (TMC) প্রার্থীরা। তো অন্যদিকে ভেস্তে যেতে বসেছে বাম-কংগ্রেস (Congress) জোট। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে কলকাতার কেন্দ্রীয় কমিটি মাঝপথে ছেড়ে আগরতলায় ছুটে আসেন পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। শেষ মুহুর্তে জোট ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী দু’-একদিনের মধ্যেই চিত্র স্পষ্ট হবে।
সোমবার বনমালিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা ত্রিপুরার যুব তৃণমূলের সভাপতি শান্তনু সাহা আগরতলার দলীয় কার্যালয় থেকে সুবিশাল মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। তেলিয়ামুরা বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী রবি চৌধুরী হাওয়াই বাড়ি থেকে বাইক মিছিল করে এসডিএম অফিসে মনোনয়নপত্র জমা করেন। রামনগরের তৃণমূল প্রার্থী পূজন বিশ্বাস, কদমতলা কুর্তির তৃণমূল প্রার্থী আবদুল হাসিম তালুকদার, পেচারথল বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী পূর্ণিতা চাকমা, বক্সনগরের তৃণমূল প্রার্থী জয়দুল হোসেন মনোনয়নপত্র জমা করেন। প্রত্যেকেই নিজের জয়ের বিষয় আত্মবিশ্বাসী।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে হাই কোর্টের নজরে অভিনেত্রী, ইডি’কে হলফনামা পেশের নির্দেশ]
এদিকে ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই জটিলতা বাড়ছে বাম-কংগ্রেস জোটে। পশ্চিমবঙ্গের ফর্মুলা কাজে আসছে না ত্রিপুরায়। ভেঙে যেতে বসেছে কংগ্রেস–সিপিএমের জোট। কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক মাঝপথে ছেড়ে তড়িঘড়ি আগরতলায় ছুটে আসেন পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। জরুরি ভিত্তিতে কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া আসনে প্রার্থী বাছাই করা হয়। সিপিএমের ছেড়ে দেওয়া ১৩টি আসনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। আর এতেই ক্ষুব্ধ সিপিএম।
সিপিএম প্রথমে ১২টি আসন ছেড়েছিল কংগ্রেসকে। পরবর্তী সময়ে রাজ্য কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অজয় কুমারের অনুরোধে আরও একটি আসন ছাড়া হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত ১৩টি আসনেও সন্তুষ্ট হয়নি কংগ্রেস। তারা ১৭টি আসনের দাবিতে অনড় থাকে। এনিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হলেও সিপিএম কোনও ভাবেই কংগ্রেসকে অতিরিক্ত আসন ছাড়তে রাজি হয়নি। যার ফলে কংগ্রেস দলের মধ্যে জোট ছেড়ে বেড়িয়ে আসার জোরালো দাবি উঠতে থাকে।
[আরও পড়ুন: ১৫ বছরের মেয়েদের বিষয়ে ভাবার সময় এসেছে, ‘নাবালিকা বিয়ে’ নিয়ে পর্যবেক্ষণে মত হাই কোর্টের]
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন কংগ্রেস ১৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেসের জনৈক নেতা জানিয়েছেন, দলকে টিকিয়ে রাখতে হলে এছাড়া আর কোনও বিকল্প ছিল না। যদিও মনোনয়নপত্র দুই পক্ষই জমা দিলেও শেষপর্যন্ত আলোচনা করে বাম – কংগ্রেস জোট টিকিয়ে রাখার একটা শেষ চেষ্টা করা হবে। সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করেছেন।
এদিকে ভোটের আগে ফের এক বিজেপি বিধায়ক পদত্যাগ করলেন। তেলিয়ামুড়ার বিধায়ক অতুল দেববর্মা ইস্তফা দিয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৮ বিধায়ক বিজেপি ছাড়লেন। স্বাভাবিকভাবে একের পর এক বিধায়কের পদত্যাগ ঘিরে চাপ বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের।