রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শূন্যতা কাটাতে এবার পেশাদার সংস্থার শরণাপন্ন সর্বহারাদের দল! রাজ্য সম্মেলনে সংগঠনের দুর্বলতা দেখিয়ে দিল পেশাদার সংস্থা। তাও আবার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে! শুধু তাই নয়, এই দুর্বলতা থেকে কীভাবে দল বেরিয়ে আসবে, কী পদক্ষেপ নেবে, সেসব পরামর্শও দিচ্ছে ওই সংস্থা। সোমবার, সিপিএম অধিবেশনের তৃতীয় দিনে এনিয়ে ঘণ্টা তিনেক আলোচনা হয়। নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত পরামর্শও দিচ্ছে কর্পোরেট সংস্থা। তবে এনিয়ে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি, পেশাদারি সংস্থা অর্থের বিনিময় কিছু করছে না। সিপিএম প্রথম থেকে এধরনের সংস্থার বিরোধিতা করে এলেও এবার কিন্তু সেই পথেই হাঁটতে চলেছে তারাও।

এবারই প্রথম রাজ্য সম্মেলনে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে আলাদাভাবে আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নাম দেওয়া হয়েছিল - 'আগামী কর্মসূচি'। সোমবার বিকেলে সেই আলোচনা হয় সম্মেলন কক্ষে। সেখানে মহম্মদ সেলিমের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পেশাদার সংস্থা রিপোর্ট পেশ করেন। সেখানে অঞ্চল ধরে ধরে দেখানো হয়েছে কেন বামেরা ভোটের রাজনীতি থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। কোথায় তাদের দুর্বলতা। যেমন, পুরুলিয়া অথবা বাঁকুড়া সেখানে একসময়ে সিপিএমের ভোট কত ছিল আর বর্তমানে কত, তার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিরোধীদের ভোট কত শতাংশ বেড়েছে সে ছবিও তুলে ধরা হয়েছে।
সেসব অঞ্চলে মূল সমস্যা কী কী, শাসকদল কতটা সফল বা ব্যর্থ তারও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এরপর দেখানো হয়েছে কোন কোন বিষয়কে সামনে রেখে সেখানে আন্দোলন করা উচিত। অর্থাৎ অঞ্চল ভিত্তিক নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে চিহ্নিত করে সেটাকে আন্দোলনের হাতিয়ার করা এটাই ছিল সিপিএমের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। নেতৃত্বের দাবি, সাধারণভাবে গোটা রাজ্য জুড়েই একই ধরনের ভোট প্রচার চালানোর যে প্রবণতা, তা বদল করতে হবে। নির্দিষ্ট অঞ্চল ধরে কৌশল চূড়ান্ত করে সেইমতো প্রচার চালাতে হবে। সম্মেলনে স্থির হয়েছে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রিক এই বিশ্লেষণ নেতৃত্বের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তারপর তাকে সামনে রেখেই চূড়ান্ত হবে প্রচারের রণকৌশল। আর তা করা হবে কর্পোরেট সংস্থার মাধ্যমে।