বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ‘ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়’, এটাই বিশ্বাস করত কমরেডকুলের নেতারা। ভুল ভাঙে ৭৪ বছর পর। স্বাধীনতা দিবসের দিন (Independence Day) জাতীয় পতাকা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা সঠিক হচ্ছে না, এটা বুঝেই গত বছর পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। কমিউনিস্ট পার্টির সিদ্ধান্তে হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। ‘বিলম্বিত বোধোদয়’ বলে কটাক্ষও শুনতে হয়। এবার আরও এককদম এগিয়ে ১৫ দিন ধরে দেশজুড়ে স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত একেজি ভবনের।
এমনিতে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পার্টির সিদ্ধান্তকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাইটার্সে নিয়মিত জাতীয় পতাকা তুলতেন বাংলার দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পার্টির কর্মসূচি নয়, সরকারি অনুষ্ঠান বলেই তাঁরা যেতেন বলে যুক্তি সাজাত আলিমুদ্দিন। গত বছর জাতীয় পতাকা তুলতে গিয়েও বিপত্তি ঘটে। আলিমুদ্দিনের ছাদে বিমান বসু পতাকা তুলতে গিয়ে প্রথমে তা উলটো পতাকা উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়। কোনওক্রমে মান রক্ষা করেন অন্য নেতারা। মাঝপথেই পতাকা নামিয়ে ফের ঠিক করে তা তোলা হয়। এবার কী হবে!
[আরও পড়ুন: সামনে উপরাষ্ট্রপতি পদের লড়াই, বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে ইস্তফা দিলেন NDA প্রার্থী ধনকড়]
এবার যে স্বাধীনতার ৭৫ বছর। আলোচনা করতে শনিবার বৈঠকে বসে কমরেডকুলের শীর্ষনেতারা। রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পার্টির অবস্থান নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবসে পার্টির ভূমিকা নিয়ে পলিটব্যুরোর বৈঠকে আলোচনা হয়। ঠিক হয়, একদিন নয়। ১৫ দিন ধরে স্বাধীনতা দিবস পালন করবে সিপিএম (CPM)। প্রতিটি রাজ্য পার্টিকে পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্ত মেনে পরিকল্পনা করার নির্দেশ পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় নেতৃত্ব।
কিন্তু কেন হঠাৎ এই বোধোদয়, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি জানান, মোদি সরকার দেশের সংবিধানের ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। সংবিধান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে অধিকার নিয়ে ১৫ দিন ধরে প্রচার চালানো হবে বলে জানান তিনি। সেইসঙ্গে কেরলের বাম সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি ও কংগ্রেস চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ সিপিএমের। বাংলার শাসকদল তৃণমূলের সুরেই সুর মিলিয়ে তাঁর দাবি, কেন্দ্র নানাভাবে পিনারাই বিজয়নের সরকারকে হেনস্তা করতে পরিকল্পনা করছে। কেরল কংগ্রেসও এর সঙ্গে যুক্ত বলেও দাবি তাঁর।