শিলাজিৎ সরকার: রবিবাসরীয় ইডেনে দেখে গেল, দ্বিতীয়জনের কাছ থেকে একটা ব্যাট চেয়ে নিয়ে গেলেন প্রথমজন। স্বদেশী সতীর্থর ব্যাট দিয়েই কী রান খরা কাটাতে চাইছেন তিনি? প্রথমজন সুনীল নারিন (Sunil Narine)। গত আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সর্বোচ্চ স্কোরার। এবার তিন ম্যাচে করেছেন মাত্র ৫১ রান। দ্বিতীয়জন নিকোলাস পুরান। চার ম্যাচে ২০১ রান করে এবার আইপিএলে অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক লখনউয়ের তারকাই। মঙ্গলবার তাঁর জ্বলে ওঠা ঠেকানোর দায়িত্ব থাকবেন নারিনের উপরেই। কিন্তু রবিবার বিকালের ইডেনে দেখা গেল, দীর্ঘ আড্ডায় মেতে রইলেন দুই বন্ধুই।
প্রথমে দু'জনেই সময় কাটালেন নিজ নিজ দলের নেটে। কেকেআরের নেটে অনেকক্ষণ হাত ঘোরালেন নারিন। পুরান আবার তখন মাঝের নেটে রবি বিষ্ণোই-দিগ্বেশ সিং রাঠিদের মহড়া নিলেন। সেসব শেষ করে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে এলেন নারিন। সঙ্গে ডোয়েন ব্র্যাভো। কিছুক্ষণ কথা বলার পর দু'জনেই গেলেন এলএসজি ড্রেসিংরুমের দিকে। তারপর সেখান থেকে নারিন বের হলেন পুরানের দেওয়া ব্যাট হাতে। পরে ফের মাঠে বসে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিলেন তাঁরা, যেখানে যোগ দিলেন আর এক ক্যারিবিয়ান তারকা-আন্দ্রে রাসেলও।
রবিবার অনুশীলনে নারিনকে পাওয়া গেল একেবারেই হালকা মেজাজে। নাইট মেন্টর ব্র্যাভোর সঙ্গে কথা বলার সময় হাসতে দেখা গেল তাঁকে। আবার অনুশীলনের ফাঁকে ঋষভ পন্থ এসে নারিনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন এলএসজি-র নতুন রহস্য স্পিনার দিগ্বেশের, যিনি আবার ক্যারিবিয়ান তারকার বড় ভক্ত। যা শুনে এক সতীর্থ প্রশ্ন করলেন দিগ্বেশকে, 'নারিন উইকেট নিয়ে শান্ত থাকলেও তুমি এত উদযাপন কর কেন?' সেই প্রশ্ন শুনে ফের মৃদু হাসি নারিনের মুখে।
এমনিতে তাঁর মুখে কোনও অনুভূতিই সেভাবে দেখা যায় না। সেখানে কোন মন্ত্রে এত হাসি দেখা যাচ্ছে তাঁর মুখে? উত্তর লুকিয়ে শেষ ম্যাচে কেকেআরের পারফরম্যান্সে। ঘরের মাঠে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে রীতিমতো চূর্ণ করেছেন নাইটরা। সঙ্গে একধাক্কায় আবার পয়েন্ট টেবলের মাঝের দিকে উঠে এসেছে দল। সঙ্গে পিচ কিংবা ব্র্যাভোর সঙ্গে কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সম্পর্কের রসায়ন সংক্রান্ত বিতর্কও ঢুকে পড়েছে ঠাণ্ডা ঘরে। এলএসজি ম্যাচের আগে সেটাই আত্মবিশ্বাসী করছে কেকেআরকে। মুরলীধরণের ভঙ্গিতে ব্র্যাভোর বল করাটা যেন তারই প্রমাণ।
এদিন নেটে সেভাবে ঘাম ঝরাননি নাইট শিবিরের কেউই। রিঙ্কু সিং, রমণদীপ সিং, মণীশ পাণ্ডেরা ব্যাটিং করলেন। বৈভব অরোরা, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তীদের নিয়ে পড়ে রইলেন ভরত অরুণ। মাঠে ঢুকে শুরুতে পিচ পরিদর্শনের পর কোচের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তেমন কিছুই করলেন না অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। কিন্তু কঠোর সাধনায় ডুবে থাকতে দেখা গেল একজনকে। তিনি ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ২৩.৭৫ কোটির প্রাইস ট্যাগকে নায্য প্রমাণের জন্য বাড়তি পরিশ্রম করছেন নাইট সহ অধিনায়ক। আসলে শেষ ম্যাচে ফিরে পাওয়া ফর্ম ধরে রাখতে এখন মরিয়া ভেঙ্কটেশ।