সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পাহাড়চূড়ায় ঘুমন্ত বুদ্ধ আরও ঝকঝকে মেঘহীন আকাশে। সোনালি রোদ ধুয়ে দিচ্ছে তার শরীর। এমনই আবহে দার্জিলিং পুলিশ এবং জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের উদ্যোগে ১৯ ডিসেম্বর থেকে বড়দিন উৎসবের সূচনা হচ্ছে পাহাড়ে। মূলত দেশ-বিদেশের পর্যটক টানতে এমন উদ্যোগ। ম্যালে চা উৎসবের পাশাপাশি বসবে আর্ন্তজাতিক ব্যান্ডের আসর। থাকবে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবির প্রদর্শনী।
ফাইল চিত্র
দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ জানান, কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারচুয়ালি ওই উৎসবের সূচনা করবেন। আর এখনই যা খবর, তাতে ২২ তারিখ থেকেই দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ে সব হোটেল ভরে যাবে পর্যটকে। হোম স্টে গুলোতেও ঠাঁই নাই রব। একই ছবি ডুয়ার্সেও। বরফ ঢাকা সিকিমের লাটুং-লাচেন রুটে তো এখনই পর্যটকদের ঢল। আর প্রতি বছরের মতো এবারও পাহাড়মুখী গাড়ির ভাড়ায় কোনও লাগাম থাকছে না, তা এখনই বোঝ যাচ্ছে।
শীত মানেই উত্তরে পর্যটনের মাস। বর্ষার পর নতুন গজিয়ে ওঠা সবুজ পাতা, ফুল, কুঁড়ি, হেমন্তের হাওয়া, ঝিরিঝিরি বরফ এক নতুন ক্যানভাসের জন্ম দেয় পাহাড় ও ডুয়ার্সের সমতলে। বছরের ক্লান্তি রুকস্যাকে ভরে বেরিয়ে পড়ে পর্যটকের দল। তাঁদের স্বাগত জানাতে সেজে ওঠে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। ব্যতিক্রম নয় এবছর। জিটিএ-র পর্যটন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাসদ নর্দেন শেরপা বলেন, "দার্জিলিং একটি পরিচ্ছন্ন পর্যটনকেন্দ্র। এখানকার পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে। একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ।"
দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি পর্যটকদের স্বাগত জানাতে সেজে উঠছে ডুয়ার্স। এখানকার জঙ্গল, নদী, চা বাগান বরাবরই পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের। গরুমারা, জলদাপাড়া, চিলাপাতা, বক্সা, চাপড়ামারিতে পর্যটকের ঢল নামে। ডুয়ার্স পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব জানান, পুজোর পর বড়দিন পর্যটনের সবচেয়ে বড় মরশুম। বড়দিন থেকে নতুন বছরের শুরু, জঙ্গল চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন পর্যটকরা। এবছর লাটাগুড়িতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ হাতি সাফারি। পাশাপাশি পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ধূপঝোরা, কালীপুর, মৌচুকি পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগ।
ফাইল চিত্র
জঙ্গলের এই পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন বন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতিম সেন জানিয়েছেন, পর্যটকদের থেকে যথেষ্ট সাড়া মিলছে। পাশাপাশি এবছর বড়দিনে ডুয়ার্সে রেকর্ড সংখ্যায় পর্যটক আসবেন, এমনই আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। দিব্যেন্দুবাবু জানান, বুকিং দেখে তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ২৪ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে ফোক ফেস্টিভ্যাল। সেটা পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণের হয়ে উঠবে।